নরসিংদীতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত

০৩ জুলাই ২০২১, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৭ এএম


নরসিংদীতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার ঘোষিত ৭ দিনের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নরসিংদী জেলাজুড়ে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তৃতীয় দিন শনিবার সকাল থেকে জেলা সদরসহ ৬ উপজেলা পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরায় মাঠে ছিল প্রশাসন, পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেককে বাড়ির বাইরে বের হতে দেখা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহি গাড়ি, রিকশা ভ্যান ছাড়া বন্ধ ছিল সবধরনের যানবাহন চলাচল। জেলা শহরের সড়কে রিকশা ভ্যান ও জরুরি পণ্যবাহি গাড়ি ছাড়া কোন যানবাহন চলাচল করেনি। তবে প্রশাসনের তৎপরতার পরও অনেককে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। তাদের অনেককেই মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। অনেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দোকানপাট খোলার চেষ্টা করলেও পরে বন্ধ করে দেয়া হয়।


সকাল থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে নরসিংদী পৌর শহরে অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: শাহ আলম মিয়া ও সেনাবাহিনীর মেজর মো. কামরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর একটি দল। এসময় শালিধা, চৌয়ালা, সাটিরপাড়া, বড় বাজার ও শিক্ষাচত্বর এলাকায় অহেতুক বাইরে বের হওয়া লোকজনকে সতর্ক করে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া নরসিংদী বাজারে দোকানপাট বন্ধ রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে কাঁচাবাজারে বেচাকেনার তদারকি করা হয়।


এছাড়া জেলার আরও ৫ উপজেলায় লকডাউন বাস্তবায়নে তৎপর ছিল উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি। বিভিন্ন হাটবাজার, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও মোড়ে ছিল পুলিশের তৎপরতা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা শেষ হলে বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক ছাড়াই লোকজনকে অহেতুক বাইরে বের হতে দেখা গেছে।

পলাশ প্রতিনিধি জানান: পলাশ উপজেলায় লকডাউন বাস্তবায়নে সকাল থেকে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা আফসানা চৌধূরীর নেতৃত্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন। এসময় ঘোড়াশাল পৌর এলাকায় দোকান খোলার দায়ে ৪ দোকানীকে ২৫ শত টাকা অর্থদ- দেয়া হয়। এসময় বাড়ির বাইরে বের হওয়া লোকজনকে সতর্ক করা হয়।

শিবপুর প্রতিনিধি জানান: শিবপুরে লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে সকাল থেকেই উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দুলালপুর বাজার, সাধারচর ইউনিয়নের গারদ বাজার, বন্যার বাজার, পুটিয়া ইউনিয়নের তেলিয়া বাজার ও ইটাখোলা এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়াও শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সালাউদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বে শিবপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি অতি প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণকে ঘর থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করতে অব্যাহত রয়েছে মাইকিং।
লকডাউন বাস্তবায়নে ৩য় দিনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪টি মামলায় আইন অমান্যকারীদের ১৫শত টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান।

মনোহরদী প্রতিনিধি জানান: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএসএম কাসেম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে লকডাউন বাস্তবায়নে অভিযান চালানো হয়। এসময় বিভিন্ন ধারায় ১১টি মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রায়পুরা প্রতিনিধি জানান: সকাল থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানসহ বিভিন্ন দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। বাড়ির বাইরে বের হওয়া লোকজনও ছিল লক্ষনীয়। পাশাপাশি লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে ছিলেন সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। উপজলো সহকারী কমশিনার (ভূমি) মো মাহামুদুর রহমান খন্দকারের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার শ্রীরামপুর রেলগেইট, বাজার, হাসমিপুর বাজার, জঙ্গি শিবপুর বাজার, উত্তর বাখর নগর বাজার, তুলাতুলী বাজার, মরজাল এবং রায়পুরা কাচাঁ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ১১টি মামলায় ৬৮০০ টাকা জরমিানা করা হয়।

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহ আলম মিয়া নরসিংদী টাইমসকে বলেন, কঠোর লকডাউনে সরকার ঘোষিত বিধি নিষেধ মানাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় জেলা প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এসব অভিযানকালে জরিমানা করাসহ আইন অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।



এই বিভাগের আরও