ভুয়া এমএলএম কোম্পানীর নামে প্রতারনার অভিযোগে ৩২ জন গ্রেফতার

০৪ জুলাই ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ এএম


ভুয়া এমএলএম কোম্পানীর নামে প্রতারনার অভিযোগে ৩২ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানীতে অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৩২ জনকে গ্রেফতারসহ ৭০জন প্রতারিত ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। অভিযানের সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান নথিপত্র জব্দ করা হয়। বুধবার (৪ জুলাই) দুপুরে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন।

জসিম উদ্দিন জানান, অতীতে বিভিন্ন এমএলএল কোম্পানী প্রতারণার মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এরই প্রেেিত সরকার পরবর্তীতে বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানীর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তদুপরি বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানী নানা পন্থায় এখনো প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বেকার যুব সমাজকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারিত ও ভূক্তভোগী কয়েক জনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেেিত এবং অনুসন্ধানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি এর একটি আভিযানিক দল টঙ্গী থানার মধুমিতা রোড হতে “লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড” নামক এমএলএম কোম্পানীতে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় প্রতারকচক্রের ৩২ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নাছির হায়দান খান (৫৫), পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন (৪৫), পরিচালক/শিক মোঃ আবু নছর (৫০) মার্কেটিং অফিসার মোঃ বাবুল হোসেন (৩১), ম্যানেজার মোঃ লুৎফর রহমান (৪০), মার্কেটিং মোঃ সেলিম রেজা (৩২), প্রশিক মোঃ জালাল আহম্মদ (৪০), অফিস সহকারী মোঃ শাহীন (২৪), মোঃ সিরাজ (২৫), ডিস্ট্রিবিউটর মোঃ সাজ্জাদ (২২), মোঃ মামুন খন্দকার (৩৪), মোঃ সাকিল (৩০), মোঃ নাজমুল হক (২৪), শ্রী পলাশ সরকার (২৪), মোঃ মাসুদ রানা (২২), মোঃ তালহা (২৪), মোঃ ছাইদুর (২২), মোঃ আঃ রহমান (২৪), জেভিয়ার জেংচাম (২৩), মোঃ সাকিব (২৩), এ্যালবিন (২১), মোঃ রহিম বাদশা (২১), বাপন (২৫), মোঃ রুবেল হোসেন (২৭), শিপন রায় (৩২), মোঃ আমিনুর রহমান (২৫), মোঃ তাছলিম উদ্দিন (২৯), মোঃ জাহিদুল ইসলাম (২২), মোঃ শওকত হোসেন (২১), মোঃ আরাফাত (২০), মোঃ আনোয়ার হোসেন (২৪) এবং মোঃ নাজমুল হক (২৬)।

র‌্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও জব্দকৃত নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, উক্ত “লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড” নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানী মাসিক ১৬ হাজার ও তদুর্ধ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতিসহ লোভনীয় অফার দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের ফাঁদে ফেলে। ভর্তির শুরুত কোম্পানীর আর্থিক লাভ ও পণ্য বিক্রির কমিশনের আশ¡াসে বাধ্যতামূলক জামানত হিসাবে জন-প্রতি ৫৫ হাজার বা এর বেশি টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে প্রশিনের নামে সপ্তাহ খানেক কালপেন করে প্রত্যেককে নতুন ০২ জন সদস্য সংগ্রহের শর্ত প্রদান করে। নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দিলে সংগৃহীত টাকার সামান্য কমিশন প্রদান করে। নতুন সদস্য দিতে না পারলে কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে খালি ষ্ট্যাম্প ও আপোষনামায় জোরপূর্বক স্বার নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে ভাড়াটিয়া লোকজন দ্বারা আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনও করে থাকে।
অভিযানকালে ভুয়া এমএলএম কোম্পানীর সু-সজ্জিত অফিস থেকে প্রতারণার শিকার ৭০ জন ভূক্তভোগীদের উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উক্ত কোম্পানীর অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪০টি মোবাইল, ০১টি কম্পিউটারের মনিটর, ০১টি সিপিইউ, ০১টি প্রিন্টার এবং বিপুল পরিমাণ ভুয়া ডকুমেন্ট (ভর্তি ফরম, নিয়ম ও শর্তবলী ফরম, পন্য ক্রয়ের ভাউচার, আপোষ নামা, অঙ্গীকারনামা, সাপ্তাহিক হিসাব রেজিষ্টার, স্পনসর নোট রেজিষ্টার, টাকা জমার রশিদ, ষ্ট্যাম্প, হাজিরা বই ও পণ্য সরবরাহের চুক্তিপত্র) উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও