রায়পুরায় মারধরের অভিযোগে কেন্দ্রিয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে

০৮ জুলাই ২০২১, ০৬:২৩ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পিএম


রায়পুরায় মারধরের অভিযোগে কেন্দ্রিয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর রায়পুরায় সাবেক ছাত্রদল নেতাকে মারধরের অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে রায়পুরা পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্বাস আলী ওরফে নাহিদ তাকে মারধরের অভিযোগে রায়পুরা থানায় এই মামলা করেন।


মামলার আসামীরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল (৩৪), রায়পুরার অলিপুর ইউনিয়নের নবিয়াবাদ গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে রাফসান শাওন (২৩), পৌর এলাকার শ্রীরামপুরের মুছা মিয়ার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (২৫), আদিয়াবাদ ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে রুবেল প্রধান (৩০) ও চর আড়ালিয়া এলাকার শাহ পরাণ (২৮)। উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের বাড়ি রায়পুরা পৌর এলাকার হাছেন আলীর মোড়ে।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে তৃণমূলের যোগ্য ছাত্রনেতাদের বঞ্চিত করে কেন্দ্র থেকে চুরি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ অস্ত্র, অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামীদের স্থান দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূলের বঞ্চিত ছাত্রনেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে নরসিংদী জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এতে ইকবাল হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হন। অন্যদের মত মামলার বাদী আব্বাস আলী ওরফে নাহিদও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের সমালোচনা করে বেশ কিছু পোস্ট দেন। এর জের ধরে বিভিন্ন সময় ইকবাল হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা প্রায়ই তাকে হুমকি দিতেন।

মামলার বাদী আব্বাস আলী ওরফে নাহিদের অভিযোগ, গত ২৮ জুন বিকেলে ছোট বোনের স্বামীর টাকার প্রয়োজন হলে মোট ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে রওনা দেন। পথে নবীয়াবাদ মোড় পৌঁছলে রাফসান শাওন, মো. আবদুল্লাহ, রুবেল প্রধান ও শাহ পরাণ নামের চারজন তাঁর পথরোধ করে। রাফসান শাওন এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে লাউড স্পিকারে কল দেন। বলেন, 'ভাই নাহিদরে পাইছি'। পরে প্রত্যুত্তরে ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, 'শালায় বেশি বাইরা গেছে, তারে ঠিকমত সাইজ কর'। এরপরই আবদুল্লাহ একটি হাতুরি দিয়ে নাহিদের মাথায় আঘাত করেন তবে তা লক্ষভ্রষ্ট হয়ে নাকে লাগে। এতে নাকের হাড় ভেঙে গিয়ে রক্তাক্ত জখম হয়। রাফসান তাঁর কোমরের বেল্ট খুলে তা দিয়ে তাঁর গলা চেপে ধরে। পরে নাহিদ মাটিতে পড়লে রুবেল প্রধান বুকের ওপর বসে চোখেমুখে এলোপাতারি কিল-ঘুষি দিতে থাকে। অন্যদিকে শাহ পরান একটি লাঠি দিয়ে সারা শরীরে মারতে থাকে। পরে তারা চলে যাওয়ার সময় প্যান্টের পকেট থেকে সবমিলিয়ে ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ঘটনার পরপর স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখানকার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এতদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ঘটনার ১০ দিনের মাথায় রায়পুরা থানায় এসে ওই পাঁচ আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন সাবেক ছাত্রদল নেতা নাহিদ।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাদীকে মারধর ও ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামীদের বিরুদ্ধে।