নরসিংদীর এন কে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমস এ জিপিএ- ৪.২০ পেয়েছেন দুইজন

০৭ মে ২০১৮, ০৩:৫৮ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ এএম


নরসিংদীর এন কে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমস এ জিপিএ- ৪.২০ পেয়েছেন দুইজন
অনলাইন ডেস্ক [caption id="attachment_2358" align="alignnone" width="800"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার পর এবার এসএসসিতেও চমক দেখিয়েছে নরসিংদীর এন কে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমস।রবিবার ফলাফল ঘোষণার পর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নেচে-গেয়ে, হেসে-কেঁদে আনন্দ উল্লাসে সাফল্য উদযাপন করে। বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এন কে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাসসহ ফলাফলের ভিত্তিতে বোর্ডে স্থান দখল করে নিয়েছে একাধিকবার। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় ১৩৯ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৩৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে আর বাকি দুইজন জিপিএ ৪.২০ পেয়েছে। এই দুই শিক্ষার্থীর ফলাফল নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে চ্যালেঞ্জ করবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ২০১৬ সালেও ১০৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১০৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর ২০১৫ সালে ৫৪ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে সবাই জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকা বোর্ডে ১০ স্থান অর্জন করেছিল জেলার এই স্কুলটি। বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া এক ছাত্রী জানায়, 'শিক্ষকদের সঠিক দিক-নির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, হোম ভিজিট, টিউটেরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার কারণেই এই ভাল ফলাফল হয়েছে।' বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া একজন ছাত্র বলেন, 'এ ফলাফলে আমরা খুবই আনন্দিত। আজকের এ ফলাফল আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। সামনে আরও ভাল ফলাফল করতে।' স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি বলেন 'আমাদের এক ঝাঁক তরুণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতায় এবারও আমাদের ফলাফল ভাল। এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমার নিরন্তর চেষ্টা আছে, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।' এনকে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আজ স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, সার্থক হয়েছে কষ্টার্জিত অর্থের বিনিয়োগ। কারণ আমি সবসময় চেয়েছি সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানব সম্পদে পরিণত হউক। যাতে আমাদের সমাজে সার্টিফিকেট ধারি শিক্ষিত বেকারত্ব তৈরি না হয়। শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া সার্টিফিকেট দিয়ে কিছু হবে না, যদি এর মধ্যে সুশিক্ষা, বাস্তব জ্ঞান না থাকে। আর আমরা সবসময় সুশিক্ষায় শিক্ষা দেওয়ার মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আজকের এ সাফল্য সামনে এগিয়ে চলতে অনুপ্রাণিত করবে।' তিনি আরও বলেন, 'আজকের এই সাফল্য শুধু এই প্রতিষ্ঠানের একার না। এই সাফল্য পুরো নরসিংদীবাসীর। এরই লক্ষ্যে শুধু আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, আমি জেলার সব প্রায় ৩১৫টি স্কুল ও কলেজে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবহিকতায় প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন করে যাচ্ছি।' স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক অসীম বাড়ৈ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কলেজের এ সাফল্য শিক্ষকদের মেধা ও শিক্ষার্থীদের মেধার সেতু বন্ধনের ফসল। এই স্কুলের এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষক সকাল থেকে শুরু করে মধ্য রাত অবধি তাঁদের নিরন্তর চেষ্টায়ই ধারাবাহিক এই সাফল্য। প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন দিক-নির্দেশক শিক্ষক শুধু লেখাপড়া নয়, তাদের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, বিনোদন থেকে শুরু করে সকল ধরনের চাহিদা পূরণে সবসময় শ্রম দিয়ে আসছে। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যদি সৎ ইচ্ছা ও আন্তরিকতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। তাহলে সাফল্য অর্জন করা মোটেও কঠিন কিছু না।' উল্লেখ্য, নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা দানের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৮ সালে শহরের ভেলানগর এলাকায় থার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লা নরসিংদীতে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী মিসেস নাসিমা মোল্লার নামে যৌথভাবে এনকে এম হাইস্কুল এ্যান্ড হোমস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ৭০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে কলেজটি কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন