নরসিংদীর শিবপুরে ইউএনও অফিসে ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ

০১ এপ্রিল ২০১৮, ০৪:৫২ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পিএম


নরসিংদীর শিবপুরে ইউএনও অফিসে ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ
স্টাফ রিপোর্টার,নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ এনে ইউএনও অফিসে ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্ধিত সভা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায় ও শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদকে প্রত্যাহারের দাবীতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা। গত ২৯ মার্চ উপজেলার দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মরিয়ম বেগম মুক্তার পরাজয়কে কেন্দ্র করে রোববার বিকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এই আল্টিমেটাম দেয় নেতৃবৃন্দ। উপজেলা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুনুর রশিদ খান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঞা রাখিল ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী প্রমুখ। সভায় আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মরিয়ম বেগম মুক্তা বলেন, নির্বাচনে ইউএনও শীলু রায় ও পুলিশ প্রশাসন টাকা খেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেরাজের পক্ষে অবস্থান নেয়। ইউএনও বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে নৌকার এজেন্ট ও কর্মীর উপর অত্যাচার, নির্যাতন ও গ্রেফতার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এমনকি নিজ হাতে নৌকার পোস্টার ছিড়ে ক্যাম্প ভাংচুর করে বন্ধ করে দেয়। তাতে সহযোগিতা করে পুলিশ প্রশাসন। ফলে নৌকার কর্মী ও ভোটাররা আতংকিত হয়ে ভয়ে ভোট দিতে যায়নি। সাবেক এমপি জহিরুল হক ভূঞা মোহন বলেন, স্বতন্ত্র এমপির নির্দেশনায় ইউএনও শীলু রায় ও পুলিশ প্রশাসন নৌকার বিরুদ্ধে নীল নকশা বাস্তবায়ন করেছে। ফলে দলীয় নেতা কর্মীর উপর প্রশাসনের নির্যাতনের কারণে নৌকা পরাজয়ের জন্য আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইউএনও এবং ওসিকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আহবান জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন নেতারা। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুনুর রশিদ খান বলেন, ইউএনও শীলু রায় একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি উপজেলায় লুটপাট করছেন। তিনি টাকা খেয়ে স্বতন্ত্র এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন। ফলে এই দুর্নীতিবাজ ইউএনও’র বিরুদ্ধে তিনি জুতা ও ঝাড়– মিছিল কর্মসূচী ঘোষনা করেন। তিনি আগামী রোববার পর্যন্ত বর্ধিত সভা মুলতবী করেন। সভা শেষে নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঘেড়াও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, জুতা মিছিল ও হামলা করেছে। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায় অফিসে ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্য্যালয় থেকে বিক্ষোব্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, দুলালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেরাজুল হক মেরাজ কাউন্সিলর ভোটে প্রথম নির্বাচিত হলেও তাকে মনোনয়ন না দিয়ে মরিয়ম আক্তার মুক্তাকে মনোনয়ন দেয় স্থানীয় নেতারা। আর এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেরাজুল হকের কাছে পরাজিত হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মরিয়ম বেগম মুক্তা তৃতীয় স্থান লাভ করে।