নরসিংদীর মনোহরদীতে এক লুকমা হুজুরের খপ্পরে অসংখ্য পরিবার

২৯ মার্চ ২০১৮, ১১:০১ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ এএম


নরসিংদীর মনোহরদীতে এক লুকমা হুজুরের খপ্পরে অসংখ্য পরিবার
নিজেস্ব প্রতিবেদক [caption id="attachment_2095" align="alignnone" width="800"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] কে.এইচ.নজরুল ইসলাম,নরসিংদীঃনরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলা একদুরীয়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে লুকমা হুজুরের খপ্পরে পড়ে উপজেলার অসংখ্য পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।সপ্তাহে ৪ দিন রোগী দেখেন লুকমা হুজুর সোম,মঙ্গল,বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত দিন বিভিন্ন কেরামতি দেখিয়ে এলাকার সহজ সরল লোকদেরকে প্রথমে তার আয়ত্বে নেয়। পরে শুরু করে তার আসল উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা।কাউকে বিদেশ পাঠানো, সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়া ও মানসিক রোগীকে সুস্থ্য করার, ঔষধ বিক্রি, নাম করে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লুকমা হুজুর তার অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।জেলার মনোহরদী উপজেলার একদুরীয়া ইউনিয়নের হাতিরদীয়া বাসস্টেশনের ১ কিঃমিঃ পূর্ব পাশে সৈয়দপুর বসুর বাড়ি বাড়ি নামে পরিচিত ঐ বাড়ি ভাড়া নিয়ে জয়নাল হুজুর ওরফে লুকমা হুজুর (৫০) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে কয়েক বছর দরে।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, তার সহযোগী সুফিয়া (২৩) এসব কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। জ্বীনের শক্তি, অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে তার পক্ষে এলাকার অনেক প্রভাবশালী লোকজনসহ দালাল রয়েছে।সঙ্গবদ্ধ চক্রটি লুকমা হুজুরকে বিভিন্নভাবে মানুষকে পরিচয় দেয়। সাধারণ মানুষ আস্তে-আস্তে ওই কথা বিশ্বাস করে তার এ প্রতারণার ফাঁদে পা দেয়।মানুষের আগ্রহ দেখে লুকমা হুজুর তার নিজগৃহে আসন বসিয়ে চিকিৎসা প্রদান শুরু করে।প্রতারণা নতুন ফন্দি হিসেবে যুবতী নারীকে আসনে বসিয়ে তার উপর জ্বীন সোয়ারের নাম করে চালায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড।কথিত জ্বীন শোয়ারের নামে রোগী সহ আশপাশ উপজেলার অসংখ্য মহিলা ও যুুবতী তার এ ফাঁদে পড়ে লালশার শিকার হয় বলে জানা গেছে।তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে এলাকার সচেতন মহল মুখ খুলছে না বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।এমনি এক ভুক্তভোগী এক রোগী খাদিজা বেগমের মা জহুরা(৬০) জানায়, লুকমা হুজুরের কাছে আমি গিয়েছি। আমি বুড়া হয়ে গিয়েছি আমার শরীর ব্যাথা ঐ হুজুর বলে আমাকে বলেন, লেবু,আপেল, কমলা এই গুলি খাওয়া নিষেধ।হুজুরের কাছ সকাল বেলা গেলে রাত ১০ টা- বা ১১ সময় হুজুর আমাদের ভাতের নলা ফাইয়ে বিদায় দেয়।এই ভাতের নলাকে -ই লুকমা বলে।হুজুরের কাছে সবাই মহিলা যায়, পুরুষ কম যায়।এই লুকমা হুজুরের কাছে কেন যায় আমি কিছুই বুঝিনা।কথা হয় আরও এমন অনেক ভোক্তবোগী রোগীর সাথে কথা হয় তারা বলেন,হুজুর অনেক রোগের চিকিৎসা করেন যেমন, কলম পড়া,টিউমার,পেট মাথা ব্যাথা ও কোমর ব্যাথা সন্তান না হওয়া,বিদেশী লোকের কম বেতন,জায়গা জমি দখল,পেরালাইস্যাস,স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া,পড়ালেখা কম করার কারন, রোগের চিকিৎসা করাতে কথিত জয়নাল হুজুর ওরফে লুকমা হুজুরের কাছে যান। ওই থেকে চিকিৎসার নামে প্রথমে ১ শত টাকা পরে আরো ৩ হাজার টাকাসহ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।পরে আরো টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে ক্ষতি হয়ে যাবে বলে আমাকে হুমকি দেয়।অপরদিকে এলাকার সচেতন বাসিন্দারা জানায়,এই জয়নাল মিয়া ছোট সময় থেকে এই গ্রামের বসুর বাড়িত কাজের লোক হিসেবে থাকেন।এখন এই জয়নাল মিয়ার বয়স হয়েছে প্রায় ৫০ এর মতো।কিন্তু এখনও বিয়ে করেনি।তারপর কবে এই গুলু করে কোথায় থেকে পেল,সে লেখাপড়া জানেনা, সে এগুলো কি করে কিছুই জানিনা আমরা। জয়নাল মানুষের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে।জয়নাল হুজুর ওরফে লুকমা হুজুরের খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যেই অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এদিকে জ্বীনের বাদশার এসব কর্মকাণ্ড সর্ম্পকে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরকে উৎকোচ দেওয়ার অপচেষ্টা করেন।তার সঙ্গবদ্ধ চক্ররের দ্বারস্থ হলে কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি।ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছে প্রতারক লুকমা হুজুর বহাল তবিয়তে তার দলবল নিয়ে এলাকায় এসব অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে এলাকার ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, এ ব্যাপারে দ্রুত প্রশাসনের নজর দেয়া দরকার।