পানের গ্রাম নরসিংদীর রামপুরা: জীবিকার অন্যতম উৎস

১২ মার্চ ২০১৮, ০৩:০৪ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ এএম


পানের গ্রাম নরসিংদীর রামপুরা: জীবিকার অন্যতম উৎস
অনলাইন ডেস্ক [caption id="attachment_1937" align="alignnone" width="600"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার রামপুরা গ্রামের কৃষকদের আয়ের প্রধান উৎস পান। প্রায় গ্রামজুড়েই রয়েছে বরজ। আর এ থেকেই তারা মেটাচ্ছেন পরিবারের যাবতীয় ব্যয়ভার। সরেজমিন রামপুরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এক চাষী তার বরজ থেকে পান তুলছেন। এ সময় আলাপকালে তিনি নরসিংদী টাইমসকে জানান, পানই হচ্ছে এ গ্রামের আয়ের প্রধান উত্স। তারা পান চাষের সঙ্গে যুক্ত আছেন বংশানুক্রমিকভাবে। তার পূর্বপুরুষরাও এর আবাদ করেছেন। এমনকি তার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি এ কাজে যুক্ত আছে। [caption id="attachment_1938" align="alignnone" width="830"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] তিনি নরসিংদী টাইমসকে আরো জানান, নিজস্ব জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে পানের আবাদ করছেন। পুঁজি হিসেবে ঋণ নিয়েছেন ব্যাংক থেকে। এবার তার এক বিঘা জমিতে পানের দারুণ ফলন হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে কম হলেও ১০ হাজার টাকার পান বিক্রি করছেন। বরজের একটু সামনেই দেখা হয় আরেক পানচাষীর সঙ্গে। দ্বিতীয় চাষী প্রথম চাষীর মত একই কথা বলেন তিনি নরসিংদী টাইমসকে জানান, তিনি তার পৈতৃক দুই বিঘা জমিতে দেশী জাতের লাল ডিঙ্গি ও গয়েশু নামে দুই ধরনের পান চাষ করেছেন। এ পান চাষ থেকেই চলছে তার সংসারের ভরণ-পোষণ। তিনি আরো জানান, কুয়াশা ও অতিবৃষ্টি পানের প্রধান শত্রু। এজন্য একটু উঁচু জমিতে পানের বরজ করতে হয়। তাছাড়া কুয়াশা প্রতিরোধে ওপরে মাচা ও চারপাশ ঢেকে দিতে হয়। এ গ্রামের আরো কয়েকজন পানচাষী নরসিংদী টাইমসকে জানান, পানের জন্য এ এলাকাটি বেশ উপযুক্ত। এখানে পান ছাড়া অন্য কোনো ফসল তেমন হয় না। ফলে পানই এ এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল। [caption id="attachment_1939" align="alignnone" width="400"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] তারা আরো জানান, পান চাষের জন্য জৈব সার, খৈল ও অল্প পরিমাণে ইউরিয়া প্রয়োজন হয়। তবে পানক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। কখনো কখনো মারাত্মক পচনও লাগে। এসব বিষয়ে চাষীদের সবসময় সাবধান থাকতে হয়। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রামপুরা ছাড়াও মনোহরদীর খিদিরপুর, পীরপুর, ডুমনমারা, লেবুতলা, শরীফপুর, ড্রেনের ঘাট, পাড়াতলা, সাগরদী, নয়াপাড়া, মনতলা বীরগাঁও, কাজীরচরসহ ১৩-১৫টি গ্রামে পান চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। এ থেকে গত বছর পান উত্পাদন হয়েছিল ১২ হাজার টন। তবে এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বেশি হওয়ায় ১০ হাজার টন উত্পাদন হয়েছে। এছাড়া পলাশ উপজেলায় আট হেক্টর জমি থেকে ৮০ টন ও শিবপুর উপজেলায় দশমিক চার হেক্টর জমি থেকে চার টন পান উত্পাদন হয়েছে। নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. লতাফত হোসেন জানান, পানকে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তবে এ ফসলটি নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। গবেষণার মাধ্যমে পানের উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হলে কৃষকরা আরো উপকৃত হবেন।