ধুলাবালির শহর নরসিংদী

০৪ মার্চ ২০১৮, ০৪:০৯ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম


ধুলাবালির শহর নরসিংদী
নিজেস্ব প্রতিবেদক [caption id="attachment_1792" align="alignnone" width="550"]
ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] ‘যানজটের যন্ত্রণা আর আবর্জনার মাছি, ধুলাবালির এই শহর আমাদের নরসিংদী শহর ’—এই মন্তব্যটি সম্প্রতি নরসিংদী -প্রবাসী এক স্থপতি তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন। শহরের বর্তমান অবস্থা এমনই ভয়াবহ যে, মাত্র ৫ কিলোমিটার (জেলখানার মুড় থেকে কলেজ হয়ে নতুন বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত) যাওয়া-আসার জন্য সবাইকে দিনের প্রায় এক - দুই ঘণ্টার বেশি সময় গর্তযুক্ত ধুলোবালিতে পরিপূর্ণ এবড়োখেবড়ো রাস্তায় ব্যয় করতে হয়। এমনকি শহরের অন্য রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ অবস্থায় পরিণত হয়েছে । রাস্তার পাশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে এমন কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান, যেগুলো ধোঁয়া কিংবা কার্বন উৎপন্ন করছে। নতুন বাজার থেকে সঙ্গীতা পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার পথ যাতায়ত এর অযোগ্য হয়ে আসে যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রচন্ড ধুলাবালি। শিশু ও বয়স্ক যারা প্রতিনিয়ত এই পথ ব্যবহার করছেন তারা ধুলাবালির কারণে নানা রকম অসুখ এ ভোগতেছেন। দিন এর পর দিন এই ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে বায়ু দূষণ জনিত রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে আশংকাজনকভাবে। দূষণজনিত ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য অধিক ধুলাবালি প্রবন এলাকা পরিহার করাসহ অনান্য সাবধানতার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। নরসিংদী শহরের এক প্রান্ত সংগীতা থেকে অপর প্রান্ত সাহেপ্রতাপ, আরশীনগর, বালুরচর, নরসিংদী সরকারি কলেজ মোড়,পুরাতন জর্জ কোর্ট এলাকা, সাটিরপাড়া , বাস স্ট্যান্ড সর্বত্র ধুলোয় দূষিত। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী চাকরীজীবী, গাড়ির চালক, রাস্তায় দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক পুলিশসহ সবাই অতিষ্ট ধুলাবালিতে।কলেজ এরিয়া এবং বালুরচর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া যায় না, নাক চেপেও রেহাই পাওয়া যায় না।একজন ব্যবসায়ী মতে , ধুলার যন্ত্রনায় দোকান খোলা রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ছে।দোকানের সামনে দিনে তিন- চারবার পানি ছিটাতে হয়, তারপরও মালপত্র ধূলায় ঢেকে যায়। [caption id="attachment_1793" align="alignnone" width="700"]
ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] দূষণ রোধ করার জন্য পরিবেশ দফতর পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর ৭ ধারা অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনাও চোখে পড়ছে না কারও। করলেও তা যথেষ্ট নয়, বিআরটিএ ( সড়ক পরিবহন কর্তপক্ষ), পুলিশ ও নরসিংদী শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে শুধু বায়ুদূষণের কারণে। নরসিংদীর পরিবেশদূষণের কারণে মানুষ দিন দিন বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে । পরিবেশদূষণের কারণে অধিক হারে মানুষ অ্যাজমা ও নানা রকম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। পরিবেশদূষণের কারণে সংক্রামক রোগের হার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার ব্যবহার, যা সৃষ্টি করছে ভয়ানক অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স আরেক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সমস্যা।