ছাপাখানা থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস!

৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:২৭ এএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ পিএম


ছাপাখানা থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস!
অনলাইন ডেস্ক প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় দুই বছরে ধরে বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করা হলেও এখন ছাপাখানা থেকেই করা হচ্ছে প্রশ্নফাঁস। প্রশ্ন বিক্রির জন্য মাথাপিছু নেয়া হতো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। সিআইডির অনুসন্ধানে রয়েছে প্রশ্নফাঁসের আরও চারটি চক্র। মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে রাঘব রোয়ালদের নাম। সিআইডি জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর (বুধবার) প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় শিক্ষার্থী সজিব আহমেদকে। রাজধানীর ইন্দিরা রোডের ‘পিপলস প্রিন্টিং প্রেস’ নামের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী খান বাহাদুর কাছ থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করত সজিব। চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় সিআইডি প্রায় ২০টির মত অপারেশন পরিচালনা করে। প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মধ্যে ১৫ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত ২৭ ডিসেম্বর (বুধবার) সজিবকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। সিআইডির প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে সজিব। সজিবের গ্রামের বাড়ি তেগড়িয়ার মাদারগঞ্জ উপজেলার জামালপুরে। তার বাবার নাম আব্দুস সোবাহান। সজিব জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (ত্রিশাল, ময়মনসিংহ) জনপ্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সিআইডি সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের সজিব প্রশ্নফাঁস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষাথীকে ঘ ইউনিটে ভর্তি করে। ২ জন ফিন্যান্সে, একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক , একজন ইসলামিক স্টাডিজ ও আরেকজনকে অন্যবিভাগে ভর্তি করার। মাথাপিছু নেয়া হয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস বলেন, প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত সজিব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজিব শিকার করেছে সে রাজধানীর ইন্দিরা রোডের ‘পিপলস প্রিন্টিং প্রেস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী খান বাহাদুর কাছ থেকে প্রশ্ন কিনে তা ফাঁস করত। তিনি বলেন, সজিবের রিমান্ড চাওয়া হবে। এছাড়া তার কাছ থেকে প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে বলেও জানান এই তদন্ত কর্মকর্তা। সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ ইউনিটের প্রধান বিশেষ সুপার (এসএস) মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো চারটি চক্র রয়েছে। যাদের ধরতে কাজ করছে সিআইডির একটি টিম। শিক্ষকদের জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, সব কিছুকে মাথায় রেখেই আমরা তদন্ত করছি। কোনো কিছু্কেই আমরা সন্দেহের বাইরে রাখিনি। প্রায় দুই বছর ধরে ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস করা হলেও এখন ছাপাখানা থেকেই প্রশ্নফাঁস হচ্ছে। এদিকে গত ২০ অক্টোবর ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া ইশরাক হোসেন রাফিকে গ্রেফতার করে পুলিশ্। পরে নভেম্বর মাসে জামিন পায় রাফি। গ্রেফতারের পরবর্তী সময়ে রাফির বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা না মিললেও এখন তার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সিআইডি। রাফির বাবার নাম ইমদাদ হোসেন তালুকদার। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম জানান, রাফির নামে কতোয়ালি মডেল একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভাঙচুরের ঘটনার একটি মামলার প্রধান আসামি রাফি।


এই বিভাগের আরও