আলোকবালীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে তিনজন নিহত, আহত ২২

০৪ নভেম্বর ২০২১, ১২:৫৭ পিএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ এএম


আলোকবালীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে তিনজন নিহত, আহত ২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তার ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এক নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২২ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।


নিহতরা হলেন- নেকজানপুর এলাকার কডু মিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৫০), আ: জলিল মিয়ার ছেলে আশরাফুল হক (২০) ও আ: হক মিয়ার স্ত্রী খোরশেদা বেগম খুসু (৪৫)।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলোকবালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আসন্ন ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এই বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এ নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।


গত মঙ্গলবার ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল খায়ের এর সমর্থকরা নির্বাচনী মিছিল করেন। এসময় মিছিলে অংশ নেয়ায় এক যুবককে মারধর করে প্রতিপক্ষ মেম্বার পদপ্রার্থী রিপন মোল্লার সমর্থকরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার রাতে প্রতিপক্ষের লোকজন কর্তৃক হামলার আশংকায় আবুল খায়ের এর সমর্থকরা এলাকার একটি নির্জন স্থানে অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার সকালে হামলা করা হবে না প্রতিপক্ষের দেয়া এমন আশ^াসে আবুল খায়ের এর সমর্থকরা নিজ নিজ বাড়ি ফিরছিল। এসময় পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা রিপন মোল্লার সমর্থকরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। জবাবে প্রতিপক্ষের লোকজনও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে টেঁটা ও গুলিবিদ্ধসহ ঘটনাস্থলেই আবুল খায়ের এর সমর্থক এক নারীসহ তিনজন নিহত হয়। এসময় আহত হয়েছেন আরও ২২ জন। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায় বাকীদের সেখানেই চিকিৎসা দেয়া হয়।


এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে আলোকবালী ইউনিয়নে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন সরকার দিপু বলেন, মেম্বার প্রার্থী আবুল খায়েরের লোকজন প্রতিপক্ষের হামলার আশংকায় একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল। এই ঘটনা আমি রাতেই পুলিশে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই প্রতিপক্ষ রিপন মোল্লার লোকজন অতর্কিতভাবে গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহতসহ বেশকিছু সংখ্যক লোক আহত হয়েছে।


নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহাম্মদ হাসান আল-নূর বলেন, আলোকবালী থেকে ২৫ জনকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। এরমধ্যে তিনজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। টেঁটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকী আহতদের মধ্যে ৭ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



এই বিভাগের আরও