নরসিংদীতে সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না দুই সেতু

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:০৪ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম


নরসিংদীতে সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না দুই সেতু

আসাদুজ্জামান রিপন:
নরসিংদীতে চলাচল অনুপযোগী মাটির সংযোগ সড়কের কারণে কাজে আসছে না দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত দুই সেতু। সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের ধামের ভাওলা ও শীলমান্দি ইউনিয়নের টেক বাগহাটায় যাতায়াতের জন্য নির্মিত এই সেতু দুটিতে পাকা সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে চলাচল উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।  

স্থানীয়রা জানান, নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়ক হতে পাশের মহিষাশুড়া ইউনিয়নের ধামের ভাওলায় যাতায়াতের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা ব্যয়ে সালে একটি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। সেতুটির দুই প্রান্তে অল্প পরিমানে মাটি ফেলে নামে মাত্র সরু আকৃতির মাটির সড়ক নির্মাণ করা হলেও এটি কোন কাজে আসছে না। মদনগঞ্জ সড়ক ও নির্মিত সেতু থেকে কয়েক ফুট নিচুতে নামেমাত্র মাটির সড়কটি ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসী। সড়কটির এক অংশে বাঁশের সাকো পার হতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে বিকল্প কয়েক কিলোমিটার সড়ক ঘুরে ও বর্ষাকালে নৌকায় মদনগঞ্জ সড়কে আসতে হচ্ছে ধামের ভাওলা গ্রামবাসীকে। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হলো রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনে অল্প সময়ে নরসিংদী, মাধবদীসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন সহজতর হতো বলে জানান এলাকাবাসী।
একইভাবে নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়ক হতে পাশর্^বর্তী শীলমান্দি ইউনিয়নের টেকবাগহাটা এলাকায় যাতায়াতের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে আরও একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এই সেতুর দুই পাশের মাটির সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। মাটির সড়কটি পানিতে তলিয়ে যাওয়াসহ বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়ক থেকে অনেক নিচু হওয়ায় চলাচল করতে পারে না কোন ছোট যানবাহন।  

ধামের ভাওলা গ্রা মো: ফারুক হোসেন বলেন, গ্রামের অনেক মানুষ নরসিংদী ও মাধবদীর বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। এই সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার কারণে বিকল্প পথে ঘুরে যাতায়াতে বাড়তি সময় ব্যয় হচ্ছে।

একই এলাকার নূর মোহাম্মদ বলেন, নির্মাণের কিছুদিন পর হতেই এই সেতু কোন কাজে আসছে না। সড়ক সচল না থাকলে সেতুর দরকার কী ছিল? ছোট যানবাহন দূরের কথা এক স্থানে বাঁশের সাকো থাকায় পায়ে হেটে চলারও অযোগ্য এই সড়ক। গ্রামের মানুষদের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের জন্য সড়কটি ছোট যানবাহন চলাচল করার উপযোগী করা দরকার।  

শীলমান্দি ইউনিয়নের টেকবাগহাটা এলাকার বাসিন্দা রাসেল খন্দকার বলেন, মেইন সড়ক থেকে এই সেতু অনেক নিচু এবং সেতুর দুই পাশের মাটির সড়কও নিচু এবং চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় কোন যানবাহন এমন কী পায়ে হেটেও চলাচল করা যাচ্ছে না। সড়ক না থাকায় সেতুর সুফল পাচ্ছি না।

মহিষাশুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন বলেন, মাটি পরিবহনের ট্রলির কারণে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখন এই সড়কে পায়ে হেটেও চলাচল করতে পারছেন না এলাকাবাসী। এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নতুন কোন প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিশ্চিত করেই সেতু দুটি নির্মাণ ও কাজের বিল প্রদান করা হয়েছিল। দীর্ঘ কয়েক বছরে বৃষ্টি আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে থাকতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে নতুন প্রকল্পের আওতায় দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক দ্রুত মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।



এই বিভাগের আরও