বিশ্বব্যাপী মানুষের চলাফেরায় নজরদারি করছে গুগল

২১ এপ্রিল ২০২০, ০৩:৪২ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ এএম


বিশ্বব্যাপী মানুষের চলাফেরায় নজরদারি করছে গুগল
ফাইল ছবি

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের এই সময় মানুষ কোথায় কোথায় যাচ্ছেন, তার হিসেব করেছে গুগল। সম্প্রতি একটি ‘কমিউনিটি মোবিলিটি রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে তারা, যেখানে উঠে এসেছে বিভিন্ন দেশের তথ্য। তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশেরও।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে- গুগল কেনাকাটা ও বিনোদন, মুদি দোকান ও ফার্মেসি, পার্ক, বাস-ট্রেন স্টেশন, কর্মক্ষেত্র এবং বাসায় মানুষের যাতায়াত ও অবস্থানে কতটা পরিবর্তন ঘটেছে সেই তথ্য বের করেছে। এজন্য বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহারকারীদের লোকেশন ডেটা ব্যবহার করেছে তারা। সর্বশেষ ডেটাকে তুলনা করা হয়েছে ফেব্রুয়ারির সঙ্গে।

বিনোদন, কেনাকাটায় ভাটা: রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, শপিং সেন্টার, থিম পার্ক, জাদুঘর, লাইব্রেরি এবং মুভি থিয়েটারগুলো রয়েছে এই ক্যাটাগরিতে। ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এসব জায়গায় বাংলাদেশের মানুষের যাতায়ত বা গতিশীলতা ৭৬ ভাগ কমেছে। ভারতে কমেছে ৮০ ভাগ, নেপালে ৭৭ ভাগ আর পাকিস্তানে ৬৫ ভাগ।

দোকানে যাতায়ত কমেছে অর্ধেক: নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার, খাদ্য গুদাম, কৃষি বাজার, ওষুধের দোকানে বাংলাদেশের মানুষের যাতায়ত আগের চেয়ে ৫৫ ভাগ কমে গেছে। একই হারে কমেছে ভারতেও। নেপালে কমেছে ৬৮ ভাগ, পাকিস্তানে ৪৭ ভাগ।

পার্কে বেড়ানো কমেছে: জাতীয় উদ্যান, সমুদ্র সৈকত, নগর চত্বর, কিংবা পার্কগুলোতে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন মানুষ। এপ্রিলে এসে ফেব্রুয়ারির তুলনায় তা কমেছে ৩৪ ভাগ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপালে ৫৫ ভাগ, ভারতে ৫২ ভাগ, পাকিস্তানে পার্কে বেড়ানোর প্রবণতা কমেছে ৩৬ ভাগ।

যোগাযোগ কমেছে তিন চতুর্থাংশ: বাংলাদেশে বাস, রেল স্টেশনের মত যোগাযোগ কেন্দ্রগুলোতে মানুষের গতিশীলতা ৭২ ভাগ কমে গেছে। প্রায় একই হারে কমেছে ভারত ও নেপালেও। তবে পাকিস্তানে এই হার হ্রাস পেয়েছে ৫৫ ভাগ।

কাজে যাচ্ছে না মানুষ: বাংলাদেশে ২৭ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এর প্রভাবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় এপ্রিলে কর্মক্ষেত্রে মানুষের গতিশীলতা ৫৮ ভাগ কম ছিল। ৪৮ থেকে ৬৪ ভাগ গতিশীলতা কমেছে ভারত, পাকিস্তান, নেপালেও।

বাসায় থাকার প্রবণতা বেড়েছে: ছুটি আর বিধিনিষেধে মানুষের ঘরে সময় কাটানোর প্রবণতা বেড়েছে। গৃহস্থলে থাকার হার এই এক মাসে ২৫ ভাগ বেড়েছে। এক্ষেত্রে ৩০ ভাগ বেড়েছে ভারতে, ১৯ ভাগ পাকিস্তানে আর ২১ ভাগ নেপালে।

গতিশীলতা ব্যাপক কমেছে ইউরোপে: ইউরোপের কোভিড ১৯ এ বেশি আক্রান্ত দেশগুলোতে মানুষের গতিশীলতা ব্যাপক হারে কমেছে। স্পেন, ইটালি, ফান্সে দোকান ও বিনোদন কেন্দ্রে যাতায়ত হ্রাস পেয়েছে ৮৬ থেকে ৯০ ভাগ। এসব দেশের মানুষ এমনকি পার্কে ভ্রমণও আগের চেয়ে আশিভাগ কমিয়ে দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রা বদলেছে কম: পৃথিবীতে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সংক্রমণে উপরের দিকে থাকা দেশগুলোর তুলনায় তাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন কমই ঘটেছে। ফেব্রুয়ারির তুলনায় এপ্রিলে ৪৫ ভাগ কমেছে কেনাকাটা বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়া, পার্কে যাতায়ত কমেছে ১৬ ভাগ। আর যোগাযোগ কেন্দ্রগুলোতে মানুষের চলাচল ছিল আগের চেয়ে ৪৯ ভাগ কম।

জার্মানির পার্ক ভ্রমণ বেড়েছে: জার্মানিতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত। লকডাউন করা না হলেও দেশটিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে রয়েছে বিধিনিষেধ। মানুষ এই সময়ে দোকান, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কমাননি পার্ক ভ্রমণ বরং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৩৫ ভাগ বেড়েছে। নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের বাসিন্দারা এমনকি আগের চেয়েও ৭৭ ভাগ বেশি সময় কাটাচ্ছেন পার্কগুলোতে।



এই বিভাগের আরও