আফগানিস্তানে 'ভোটকেন্দ্রের কাছে বিস্ফোরণে আহত ১৫

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০১:২৭ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম


আফগানিস্তানে 'ভোটকেন্দ্রের কাছে বিস্ফোরণে আহত ১৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে নানা প্রতিকূলতার মধ্যদিয়েই চলছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে ভোট শুরুর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারের একটি ভোটকেন্দ্রের পাশে বিকট বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে তাৎক্ষণিক কারও প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্লেষকদের মতে, এবারের ভোটের মাধ্যমে দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে। যে কারণে অঞ্চলটিতে দীর্ঘদিনের সহিংসতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাদেশিক সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'ভোটকেন্দ্রের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এখনো কারও মৃত্যুর খবর না পাওয়া গেলেও হতাহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।'

যদিও ভোট শুরুর আগেই সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তালিবানের পক্ষ থেকে সতর্কতা মূলত বার্তা পাঠানো হয়েছিল। যেখানে তারা নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র হামলা চালাবে বলে জানানো হয়। যদিও ভয়াবহ সেই হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী কিংবা সংগঠন হামলাটির দায় স্বীকার করেনি।

এ দিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দেশব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। যেখানে আসন্ন জঙ্গি হামলার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষাধিক নিরাপত্তাকর্মী এবং থাকছেন দেশি-বিদেশি এক লাখের মতো পর্যবেক্ষক।

এশিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে সর্বশেষ ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। মূলত সেই ভোটাভুটিতে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি এবং আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর কেউই এককভাবে পরিষ্কার বিজয় লাভ করতে পারেননি। দুজনই পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছিলেন।

যে কারণে তখন দেশব্যাপী সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণে প্রায় দুই মাস পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আশরাফ ঘানিকে প্রেসিডেন্ট এবং আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর কাছে নবগঠিত প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

এর আগে গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দিবাগত রাতে শেষ হয়েছে টানা ২৮ দিনের নির্বাচনি প্রচার অভিযান। যে কারণে আজ শনিবার সকাল থেকে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাজধানী কাবুলসহ দেশের সর্বত্র অনুষ্ঠিত হবে এই ভোট গ্রহণ। আফগান সংবিধান অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তিকে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে গেলে তাকে অন্তত মোট ভোটের প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে।

অপর দিকে স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' জানায়, এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৮ জন। যেখানে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি, গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও এখনো রয়ে গেছে তালিবান বিদ্রোহীদের হামলার আশঙ্কা; কেননা এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক বেসামরিককে হত্যা করেছে যুদ্ধরত সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি।


বিভাগ : বিশ্ব


এই বিভাগের আরও