হাইরমারায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ৬ জন আহত

০৯ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৪২ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পিএম


হাইরমারায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ৬ জন আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর রায়পুরার হাইরমারায় আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আরেক বিদ্রোহী প্রার্থীর ৬ সমর্থক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাইরমারা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে (দড়ি হাইরমারা) দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর এই ইউপিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটল।  

এই ঘটনায় আহত ৬ জন হলেন, দড়ি হাইরমারা গ্রামের মো. আলমগীর হোসেনের তিন ছেলে আরিফ মিয়া (৩১), শরীফ মিয়া (২৯), তরিফ মিয়া (২৭) এবং সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সাদিকুর রহমান (৩২), মৃত সারোয়ার মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া (৩১) ও খোকা মীরের ছেলে ফেরদৌস মীর (২৭)। তাদের মধ্যে ফেরদৌস মীরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাইরমারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক বাবলা এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাননি। নৌকার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কবির হোসেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে চশমা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন মাহফুজুল হক। এ ছাড়াও মাঠে আছেন আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কামরুজ্জামানের নিজের এলাকায় সমর্থকদের নিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কিনতে আসেন মাহফুজুল হক ও তাঁর ভাই । এমন খবর পেয়ে কামরুজ্জামানের সমর্থকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে  তাদের কাছে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কামরুজ্জামানের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ৬ জন আহত হন। পরে তারা ককটেল বের করলে মো. আসিদ (২৬) ও মো. ইমন (২৫) নামের দুজনকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে তাদের রায়পুরা থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া আহত ৬ জনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিরুল আমিন জানান, আহত ৬ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের সবারই শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অন্যজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান জানান, আমার প্রতি জনগণের সমর্থন বেশি আছে বলে ইর্ষান্বিত হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাঁর জনসমর্থন না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ও টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন তিনি। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার এলাকার ভোটারদের কাছে এসেছিলেন তিনি। হাতেনাতে দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছি আমরা।

অভিযোগ অস্বীকার করে হাইরমারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুল হক বাবলা জানান, এই ঘটনায় আমি বা আমার কোন সমর্থক কোনভাবেই জড়িত নই। উল্টো তারা আমার দুজন কর্মীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ককটেল দিয়ে পুলিশে দিয়েছে। আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই আনারস প্রতীকের প্রার্থী কামরুজ্জামান এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, হাইরমারা ইউপি নির্বাচনের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলায় অপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৬ জন সমর্থক আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। স্থানীয়দের হাতে আটক আসিদ ও ইমন নামের দুই যুবককে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এই বিভাগের আরও