অবশেষে ওআইসির স্বীকৃতি পেল জেরুজালেম

১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ০২:২৬ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ এএম


অবশেষে ওআইসির স্বীকৃতি পেল জেরুজালেম
অনলাইন ডেস্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর মুসলিম বিশ্বের তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভের মধ্যে এই বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেন ওআইসির বর্তমান প্রেসিডেন্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বিশ্বের ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন দি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) এক বিশেষ অধিবেশন থেকে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির জন্য বিশ্বের অন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ অধিবেশনে উপস্থিত ৫৭টি ইসলামী দেশের প্রতিনিধিরা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘একমাত্র দুই রাষ্ট্রের সমাধানই এখানে শান্তির ভিত্তি হতে পারে।’ নেতারা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। অধিবেশনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা অগ্রহণযোগ্য। ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাত দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পারে না। জেরুজালেম সব সময়ই ফিলিস্তিনের রাজধানী। ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ-আল ওথাইমিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে বর্তমান পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ওআইসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে এবং নিন্দা জানায়। এটা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন… এবং এর মধ্য দিয়ে সমগ্র মুসলিমদের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হয়েছে।’ প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই গুণ্ডামির বিরুদ্ধে ওআইসির নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ইসরায়েলকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বদলে নতুন মধ্যস্থতাকারী খোঁজে বের করার জন্যও আহ্বান জানান। অধিবেশনে অংশ নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান। অধিকাংশ মুসলিম দেশ অধিবেশনে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানকে পাঠালেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ও মিসর সেখানে মন্ত্রীকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছে। গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বকে আরো সংকটময় করবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেরুজালেমের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বেশ শঙ্কিত সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। এ বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। জেরুজালেম পবিত্র ভূমি হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয় দেশেই গুরুত্বপূর্ণ। এর দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই দেশের দ্বন্দ্ব বহু পুরোনো। ইসরায়েল সব সময়ই জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে আসছে। পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেম ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে বলে দেশটির নেতারা বলে আসছেন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরে ১৯৮০ সালে তারা অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে নেয় এবং ইসরায়েলের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে।