যৌতুক না দেয়ায় গৃহবধুর চুল কেটে সিগারেটের ছ্যাকায় নির্যাতন

১০ জানুয়ারি ২০১৮, ০২:৩৪ পিএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ এএম


যৌতুক না দেয়ায় গৃহবধুর চুল কেটে সিগারেটের ছ্যাকায় নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তিন লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে না পারায় অথরা আক্তার ওরফে সুমি (২২) নামে এক গৃহবধুকে চুল ও ভ্রু কেটে সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন করেছে স্বামী পরিবারের সদস্যরা। গত ৩০ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১ জানুয়ারি নির্যাতিতা গৃহবধু অথরা আক্তার ওরফে সুমি বাদী হয়ে স্বামী শশুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলার বিবরণে জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর গ্রামের আ: হাশেমের ছেলে কবির হোসেনের সঙ্গে একই উপজেলার সাহার খোলা গ্রামের বাহার উদ্দিনের মেয়ে অথরা আক্তার ওরফে সুমির বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য সুমির উপর নির্যাতন করে আসছে। দাম্পত্য জীবনে দুই শিশু সন্তানের কথা বিবেচনা করে এসব শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে আসছিলো গৃহবধু সুমি। কিন্তু যৌতুক এনে দিতে না পারায় নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে। গত ৩০ ডিসেম্বর বিকালে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য স্বামী কবির হোসেন, শশুর আ: হাশেম, শাশুড়ি হালেমা বেগম, দেবর হুমায়ুন ও ননদ পারভীন বেগম গৃহবধূ অথরা আক্তার ওরফে সুমির উপর চাপ প্রয়োগ করে। এতে রাজি না হওয়ায় তারা সুমির চুল কেটে মাথা ন্যাড়া করে দেয় এবং ব্লেড দিয়ে চোখের ভ্রু কেটে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে শশুর আ: হাশেম সুমির ডান ও বাম হাতে সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতন ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এসময় তার আর্তচিৎকারের আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাকে বিবস্ত্র করে উঠোনে ফেলে রাখা হয়। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে সুমির পিতা ও আত্মীয় স্বজনরা ঘটনাস্থলে গেলে তিন লাখ টাকা যৌতুক দেয়া না হলে সুমিকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার হুমকি দেয়া হয়। এ সময় আহতাবস্থায় গৃহবধু সুমিকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ১ জানুয়ারি ৫ জনকে আসামী করে রায়পুরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতিতা গৃহবধু অথরা আক্তার সুমি। এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, তদন্তের পর অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে হাশেম নামে একজন আসামী গ্রেপ্তার হয়েছে, বাকীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


এই বিভাগের আরও