এন.কে.এম. হাইস্কুল এন্ড হোমস্’র ধারাবাহিক সাফল্য

১০ জানুয়ারি ২০১৮, ১১:১০ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পিএম


এন.কে.এম. হাইস্কুল এন্ড হোমস্’র ধারাবাহিক সাফল্য
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২০১৭ সনের জেএসসি ও পিইসি পরীক্ষায় অবিস্মরণীয় ফলাফল অর্জন করে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে ঐতিহ্যবাহী এন.কে.এম. হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস্। সাফল্য অর্জনের ধারাবাহিকতায় জিপিএ-৫ পাওয়াসহ শতভাগ পাশ করার গৌরব অর্জন করেছে এন.কে.এম. হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস্। জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি ঢাকা বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসের ঢল নেমেছে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এ উচ্ছ্বাসের ঢলে যোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। এন.কে.এম. হাই স্কুল এন্ড হোমস্’র যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন জেলাবাসীকে গৌরবান্বিত করেছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির সুনাম ও খ্যাতি নরসিংদী’র গন্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এন.কে.এম. হাই স্কুল এন্ড হোমস্’র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দানবীর বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব আব্দুল কাদির মোল্লা’র বলিষ্ঠ পদক্ষেপে শিক্ষকদের কঠোর শৃঙ্খলাবোধ, শ্রেণীকক্ষে নিয়মিত পাঠদান, রুটিন মাফিক পরীক্ষা, হোম ভিজিটসহ নিবিড় পরিচর্যার ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা এ সাফল্য অর্জন করেছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। নরসিংদী পৌর শহরের মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের অদূরে ভেলানগর এলাকায় মিসেস নাসিমা কাদির মোল্লা ২০০৮ সালে এন.কে.এম. হাই স্কুল এন্ড হোমস্ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে ৭৭জন পরিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৭৭ জন শিক্ষার্থীই জিপিএ- ৫ অজর্ন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত সময়ে বিদ্যালয়টি পর্যায়ক্রমে ৬ বার পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণপূর্ব্বক শতভাগ উত্তীর্ণ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তন্মধ্যে ২০১১ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ১৬তম ও ২০১৪ সালে ১৪তম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এসএসসি’তে ঢাকা বোর্ডে ১০ম স্থান অর্জন করে। সদ্য বিদায়ী ২০১৭ সনে বিদ্যালয় থেকে ২ শত ২ জন পরীক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২শত শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। অপর ২ জন শিক্ষার্থী অ গ্রেড পেয়েছে। অপরদিকে একই বছরে বিদ্যালয় থেকে ১শত ২৫ জন শিক্ষার্থী পিইসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১২৫ জন শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বিদ্যালয়ে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী রয়েছে। লাইব্রেরীতে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ, সাইন্স-ফিকশন ও গোয়েন্দা গল্প বা উপন্যাস রয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ মনন-মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুসারে খেলাধুলা, গান, কবিতা আবৃত্তিসহ সকল আনন্দদায়ক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে সফলতা অর্জন করে থাকে। জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিবিড় পরিচর্যা, অতিরিক্ত পাঠদানের ফলেই ভালো ফলাফল সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হলে শিক্ষকরা যে কোন সময় আমাদের বাসায় এসে বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন। একবার না বুঝলে একাধিকবার বঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক গাফ্ফার ফকির বলেন, শ্রেণীকক্ষে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হয়। প্রতিটি অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা নেয়া হয়। পাশাপাশি বছরে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষা ছাড়াও বিভিন্ন মডেল টেস্ট/ক্লাশ টেস্ট নেওয়া হয়। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: শাহজাহান মিয়া জানান, এই গৌরবময় সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির মূল কর্ণধার আব্দুল কাদির মোল্লা সাহেব। তিনি সর্বদা নিবিড়ভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে তদারকির পাশাপাশি উৎসাহ উদ্দীপনাসহ সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছাতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়টির তদারকি করে থাকেন। সময়োপযোগী দিক নির্দেশনার ফলে প্রতিষ্ঠানটি উত্তরোত্তর সাফল্যজনক ফলাফল বিদ্যমান রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৫ শত ও ৬০ জন শিক্ষক রয়েছে। প্রতি বছরের শেষ মাসে বিদ্যালয়ের মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। থ্যার্মেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপক ও নরসিংদী এন.কে.এম. হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস্’র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল কাদির মোল্লা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, এই সাফল্য আমার একার নয়। এতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নিরলস ভূমিকা রয়েছে। যার ফলে শিক্ষাঙ্গণে ধারাবাহিক সাফল্য অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষা খাতে পুঁজি খাটিয়ে লভ্যাংশের আশা করলে শিক্ষা আর মানসম্মত থাকে না। তখন সেটা বাণিজ্যিক হয়ে যায়। আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কখনো সঠিক জ্ঞান লাভ করবে না। গুনগত ও মানসম্মত শিক্ষা দানের জন্য একটি শৃংখলাসহ সঠিক গাইড লাইনের প্রয়োজন। আমরা সে দিকে দৃষ্টি বাড়িয়েছি। সরকারী শিক্ষা ব্যবস্থায় “সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা” অর্জনে জাতিকে এগিয়ে নিতে একটাই পথ রয়েছে, তা হচ্ছে সঠিকভাবে মানসম্মত শিক্ষাদান করা। আমরা সেই লক্ষ্যেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দানের জন্যই নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


এই বিভাগের আরও