আলোকবালীতে ফের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১০

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৯ পিএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম


আলোকবালীতে ফের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার, বালু উত্তোলন ও দখলদারিত্ব নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১০ জন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে আলোকবালী ইউনিয়নের মুরাদনগর গ্রামে বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কলিম উল্লাহ সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত সাদেক হোসেন (৪২) মুরাদনগর গ্রামের রুপ মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ১২ দিনের ব্যবধানে এ নিয়ে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে মহিলাসহ তিনজন নিহত হলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার ও বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ইদন মিয়া (৫৫) নিহত হন। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর ফেরদৌসী বেগম (৪২) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উভয় গ্রুপের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের যৌথ অংশগ্রহণের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এ এলাকায় দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

এই প্রেক্ষাপটে সোমবার ভোরে পুনরায় চার গ্রামের দখল নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে সাদেক হোসেন নিহত হন।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও)  ফরিদা গুলসানারা কবির  বলেন, নিহত অবস্থায় আমাদের এখানে গুলিবিদ্ধ একজনকে নিয়ে আসা হয়। আহত অবস্থায় আরও কয়েকজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সংঘর্ষের পর সদর হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যমুনা টিভির নরসিংদী প্রতিনিধি হামলার শিকার হন। সংঘর্ষ ও সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শাহ আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বালুখেকো, খুনি ও অপকর্মের দায়ে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিবের পদ হতে বহিষ্কৃত আব্দুল কাইয়ুম ও তার বাহিনী নিরীহ সমর্থকদের উপর হামলা চালাচ্ছে। সে আওয়ামী লীগের দোসর ও তাদের সুবিধাভোগী। আমার দলে কোনো আওয়ামী লীগ কর্মী নেই। কাইয়ুম আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে মিলে একের পর এক খুন ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি।”

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিবের পদ হতে বহিষ্কৃত আব্দুল কাইয়ুম মিয়া বলেন, “ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপুসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখন পর্যন্ত আমার দুইজন কর্মী নিহত হয়েছেন। আসাদ উল্লাহ ও দেলোয়ার দিপুকে গ্রেফতার করলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।”

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কলিম উল্লাহ জানান, আলোকবালীর চরাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাদেক নামের একজন নিহত হয়েছেন। কয়েকজন আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।



এই বিভাগের আরও