বাবার পথ ধরেই চিরবিদায় নিল মনোহরদীর প্রবাসী কাউছার

৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০৩:২২ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ এএম


বাবার পথ ধরেই চিরবিদায় নিল মনোহরদীর প্রবাসী কাউছার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিন প্রবাসী বাংলাদেশির একজন হলেন নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার উত্তর কাচিকাটা গ্রামের মৃত কাজল মিয়ার ছেলে কাউছার মিয়া (২২)। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোকে আহাজারি করে সন্তানের মুখ দেখতে চাইছেন মা রাবেয়া বেগম।


বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন গেলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৫ বছর আগে সৌদী আরবেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান কাউছারের পিতা কাজল মিয়া। স্বামী কাজল মিয়ার মৃত্যুর পর থেকে শিশু সন্তান কাউছারকে সঙ্গে নিয়ে পাশর্^বর্তী কৃষ্ণপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন মা রাবেয়া বেগম। মা রাবেয়া বেগমের মুখে হাসি ফুটাতে দেড় বছর আগে সৌদী আরবে পাড়ি জমান কাউছার। কিছুদিন কাজ না পেলেও পরবর্তীতে কাজ পেয়ে যান সেখানে। মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে সৌদী আরবের মাটিতে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন কাউছার মিয়া। সেখানে এক মামার পাশাপাশি বাসায় থাকতেন কাউছার।


সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ছেলে কাউছারের সাথে ফোনে কথা হয় মা রাবেয়া বেগমের। এসময় মায়ের খোঁজখবর নেয়াসহ নিজের জন্য দোয়া চান কাউছার। সন্তানের সাথে এ কথাই যে শেষ কথা হবে জানা ছিলো না মা রাবেয়ার। ১৫ বছর আগে সৌদী আরবের মাটিতেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান স্বামী কাজল মিয়া। এবার একইভাবে প্রাণ গেল একমাত্র সন্তান কাউছারের। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বিলাপ করে কাদঁছেন রাবেয়া বেগম। স্বামী সন্তান হারানো রাবেয়াকে সান্তনা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন প্রতিবেশী ও স্বজনেরাও। বুধবার বিকেলে মামার ফোনের মাধ্যমে কাউছারের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে বিলাপ করছেন রাবেয়া বেগম।


বিলাপ করতে করতে মা রাবেয়া বেগম বলেন, স্বামী সন্তান হারানোর পর এখন আমার আর কেউ রইলো না। আমি কী নিয়ে বাঁচবো? শেষবারের মত সন্তান কাউছারের মুখ দেখতে চাই।
কাউছারের মামা মো: আজহারুল বলেন, ভাগ্নে কাউছারই ছিলো আমার বোনের একমাত্র ভরসা। কাউছারকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন। অভাব অনটন দূর করতে বিদেশে গিয়ে সে নিজেই যে এভাবে পরপারে চলে যাবে ভাবিনি কেউ। দ্রুত কাউছারের লাশ দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।


গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে জেদ্দা শহরের বাইরে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহতরা সকলেই সৌদির ইয়ামামা কোম্পানিতে পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।



এই বিভাগের আরও