মাধবদীতে ইউপি মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১১:২০ পিএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পিএম


মাধবদীতে ইউপি মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীর মাধবদী থানার নুরালাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম। এলাকাবাসীর নিকট তিনি সুদী (সুদখোর) হকুল মেম্বার হিসেবে পরিচিত বলে দাবি স্থানীয়দের। সুদের ব্যবসা সংক্রান্ত জেরে প্রায়ই এলাকায় তার নেতৃত্বে¡ পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন জনের উপর হামলা, মামলাসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন, বাড়ীঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও মেম্বার ফখরুল ইসলাম নানা অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই অত্যাচারের শিকার হতে হয়।


সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, গত ৩০ অক্টোবর বুধবার রাতে নুরালাপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকার কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য ফখরুল মেম্বারের লোকজনকে দায়ী করছেন এলকাবাসী। এ হামলার ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও আতঙ্ক কাটেনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর।
এলাকাবাসীর দাবি ঘটনার রাতে কান্দাপাড়া এলাকার মানিক মিয়া ও জুলহাস মিয়ার বাড়িসহ উজ্জ্বলের মুদির দোকান ও ছাত্র কল্যাণ সমিতির আসবাবপত্র ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট চালায় মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী। হামলাকারী দলে ছিল মেম্বারের ছোট ভাই সাগর ও তার সহযোগীরাসহ একই গ্রামের আহসানউল্লার তিন ছেলে সোহেল, রুবেল, পাভেল, মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে রনি ও জনি, হাবু মিয়ার ছেলে দৌলত বাদশাহ, মতি মিয়ার ছেলে আসিফ, আবুলের ছেলে কাউসারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জন যুবক। এ ঘটনায় সুদী মেম্বার নিজেই মদদ ও নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানান তিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, গত ৩০ অক্টোবর মেম্বারের উকিল জামাই রুবেল এর সাথে একই এলাকার মানিকের ভাতিজা শাহিন ও তার ভাই মামুনের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় মেম্বার দলবল নিয়ে এসে মানিকসহ তার তিন ভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় মানিকের ভাতিজা মামুনকে পিটিয়ে আহত করে। এ তান্ডবের পর থেকে ওই বাড়িতে কেউ থাকতে পারছে না, বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা।
এ খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসার পর ওই মেম্বারের ভাই সাগর দলবল নিয়ে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে পুনরায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে (৪ নভেম্বর) সোমবার রাতে উজ্জবলের মুদি দোকানটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেম্বার ফখরুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে আনী সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। মানিক ও তার বংশের সবাই ডাকাত দলের সদস্য। আমি এ ঘটনার মীমাংসা করতে গেলে মানিক ও মামুন রাম দা নিয়ে তেড়ে আসে। তা দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে আমি ভয়ে পুলিশ ও চেয়ারম্যানকে ঘটনা অবহিত করি। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

নুরালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফয়সাল ভূইয়া বলেন, ফখরুল ওরফে হকুল সুদের ব্যবসা করেন ঠিক আছে, তবে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। তার ভয়ে কান্দাপাড়া এলাকায় কেউ আতঙ্কে আছে বলে জানা নাই। চেয়ারম্যান গত ৩০ অক্টোবরের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, কান্দাপাড়া এলাকায় মানিক মিয়ার সাথে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফখরুলের সমর্থক লোকজনের। এঘটনার মীমাংসায় বসলে উভয় পরে মধ্যে হাতাহাতি হয়। এসময় ফখরুল মেম্বারের উদ্দেশ্যে রামদা নিয়ে হত্যার উদ্যেশে তেড়ে আসে তাদের প্রতিপ। তাদের কাছে প্রায় ১১টা রাম দা ছিলো বলে অভিযোগ করেন ফখরুল মেম্বার। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করার জন্য আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। কিন্তু দুই পরে উত্তেজনার কারণে বিরোধ মীমাংসায় জটিলতা দেখা দেয়। এসময় ফখরুলের লোকজন পাশের একটি সমিতি ও একটি টিনের ঘরে আঘাত করে। পরে তাৎনিক আইনের সহযোগিতা নেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ শান্তু করে।
এ ব্যাপারে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষের অভিযোগের সঠিক তদন্ত সাপেে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।



এই বিভাগের আরও