পাঁচদোনায় ফলের আড়তে হামলায় ৫ জন আহতের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

২০ জুন ২০২৩, ০৪:২৬ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ এএম


পাঁচদোনায় ফলের আড়তে হামলায় ৫ জন আহতের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর পাঁচদোনায় একটি ফলের আড়তে হামলা চালিয়ে ৫ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্তসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নাহিদুল ইসলাম।  

গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাঁচদোনার একটি ফলের আড়তে হামলা চালিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলাটি করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নাহিদুল ইসলাম জানান, মেহেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচদোনা এলাকার ‘আল্লাহর দান’নামে একটি ফলের আড়তে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশে একদল কর্মী-সমর্থক হামলা চালিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। এ সময় তাদের বাধা দেওয়ায় আড়তটির পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা শেষে বিচারের আশায় মাধবদী থানায় মামলা করতে গেলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন আহত মালিকের বাবা হাবিবুর রহমান।

মামলার আসামীরা হলেন, মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্ত (২৭) এবং তার কর্মী মেহেদী হাসান (৩০), আশরাফ মিয়া (২৮), রবিন মিয়া (৩০), সাজন মিয়া (২৫), মো. হুমায়ুন (২৮), রাজন মিয়া (৩০), সাদ্দাম হোসেন (২৫), ছাদু মিয়া (২২), ফয়সাল মিয়া (২৮), হুমায়ুন মিয়া (৩০) ও মো. মামুন (২৬)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামী করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে নরসিংদীর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আমলী আদালত ওই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। প্রাথমিক শুনানী শেষে আদালত মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পাঁচদোনা এলাকায় রতন ভূঁইয়া ও রিপন ভূঁইয়া নামের দুই ব্যক্তির কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে ‘আল্লাহর দান’ফলের আড়ত স্থাপন করা হয়। ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে আসামীদের জমিসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে গত বুধবার চেয়ারম্যানের নির্দেশে আসামীরা চাপাতি, রামদা, লোহার হ্যামার, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে আড়তে হামলা চালায়। তারা নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলার সময় বাধা দিলে আড়তের কর্মী নোবেল মাহমুদ (২৬), হৃদয় মিয়া (২২), আনিসুর রহমান (৩৫), ইয়াছিন মিয়া (২৫) ও ফেরদৌস মিয়াকে (২০) পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সহায়তায় তাদের পাঁচজনকেই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহতরা সুস্থ হওয়ার পর মাধবদী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।

মামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহার অমিত প্রান্তের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেন এই প্রতিবেদক। কিন্তু তিনি মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, স্থানীয় জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ওই ফলের আড়তের দেয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ সময় বাধা দিতে এসে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পেশিশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি পক্ষ ফলের আড়তটি নির্মাণ করেছিল। তাই আমার লোকজন সেখানে গিয়ে ওই দেয়াল ভেঙে দিয়েছে।

এ বিষয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম। এই সংক্রান্ত আদালতের কোন নির্দেশও এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। আদালতের নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়ন করা হবে। 



এই বিভাগের আরও