ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের হামলায় সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে আহত

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:২৮ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ এএম


ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের হামলায় সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকদের হামলায় সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে ছুরিকাহত হয়েছেন। রোববার রাত ৮টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ধুন্দলপাড়া এলাকায় চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনায় ছুরিকাহত ব্যক্তির নাম শরীফুল ইসলাম (৩২)। তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মেহের উদ্দিনের ছেলে ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী অমিত হাসান ওরফে প্রান্তর সমর্থক।

স্থানীয় লোকজন ও আহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে এলাকায় পুরোদমে কাজ করছেন অমিত হাসান। তার একনিষ্ট একজন কর্মী ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে শরীফুল ইসলাম। আজ সোমবার ইউনিয়নজুড়ে ওই প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই পথসভায় অংশ নিতে গতকাল ১০টি মোটরসাইকেল জড়ো করেন তিনি। অন্যদিকে অমিত হাসানের পক্ষে কাজ না করার জন্য শরিফুল ইসলামকে নিষেধ করেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান। এরপরও পথসভাটি সফল করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শরীফুল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির সামনে থেকে শরিফকে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের দুই ভাই হাবিব ও হাফিজ এবং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব রাজসহ তাদের ১৫/২০ জন কর্মী। পরে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তাকে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়।

স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় রেফার্ড করেন চিকিৎসক। পরে ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত শরীফুল ইসলামের ভাই রাকিব বিন মেহের উদ্দিন জানান, বিপক্ষের প্রার্থীর জন্য কাজ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের দুই ভাই ও ছাত্রলীগ সভাপতির কর্মীদের নেতৃত্বে শরীফুলের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার আগে কয়েক দফা ফোন করে ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার জন্য হুমকিও দিয়েছিলেন ওই চেয়ারম্যান। আমরা এই ঘটনায় মামলা করবো।

জানতে চাইলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শিহাব রাজ মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, গতরাতে শরীফুলকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনাটি আমি শুনেছি। তাঁরই চাচাতো ভাইদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হামলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পরে নির্বাচনী ফায়দা নেওয়া জন্য এখন আমাদের অভিযুক্ত করা হচ্ছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িত নই।

এ ব্যাপারে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান জানান, চাচাতো ভাইদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ এবং পাওনা টাকা পরিশোধ বিষয়কে কেন্দ্রকরে তাদের ঝগড়া হয়েছে। এতে আমার কিছু বলার নাই, যারা মেরেছে তারা এবং আহতরা সকলেই আমারও আত্মীয়। এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নাই।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় কেউ থানায় এসে আমাদের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ জানাননি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।