শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে মাধবদীর কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা

০৯ জুন ২০২১, ০১:০৭ পিএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে মাধবদীর কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা

মাধবদী প্রতিনিধি:
করোনার কারণে সারাদেশের ন্যায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নরসিংদীর মাধবদী থানা এলাকার ৭০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল। বেতন না পাওয়া ও টিউশনি বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব স্কুলের এক হাজার শিক্ষক। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সরকারি সহায়তা পেলেও তারা পাননি কোন ধরণের প্রণোদনা।

মাধবদী এলাকার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেসরকারি এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা স্কুল থেকে প্রাপ্ত স্বল্প বেতন ও টিউশনি করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এক বছর ধরে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। বন্ধ হয়েছে টিউশনি ও কোচিং সেন্টারগুলোও। স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বেতন না দেয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষও শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না, উপরন্তু স্কুল ঘরের ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ চালাতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।


দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে বেতন না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষকরা। অনেকে সংসার চালাতে বিকল্প পেশা বেছে নিলেও কেউ কেউ বেকার। এ অবস্থায় বেশিরভাগ শিক্ষক ঋণগ্রস্ত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতে কয়েক দফা প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হলেও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ কোনো সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে মাধবদী থানা এলাকার ৭০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ১ হাজার শিক্ষক কর্মচারি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রাতষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবির পাশাপাশি প্রণোদনা সহায়তার দাবি শিক্ষকদের।

মাধবদীর নওপাড়া মডার্ন কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ মুছা মিয়া বলেন. বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারিনি। ফলে তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। না পারছেন সাধারণ কোনো কাজ করতে, না পারছেন অন্য কোনো পেশা বেছে নিতে। শিক্ষকদের একমাত্র রোজগারের পথ বন্ধ হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে আছেন।

মাধবদী থানা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, গত বছরের মার্চ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতিষ্ঠান কোনো বেতন নিতে পারছে না। যার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদেরও বেতন দিতে পারছে না।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসেন আলী বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের মালিকগণও খুবই সংকটে পড়েছেন। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল ঘরের ভাড়া দিতে না পেরে স্কুল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিক হস্তক্ষেপ দরকার।

যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী মোরশেদ জানান, এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তার কোনো নির্দেশনা আসেনি। সরকারিভাবে সহায়তার নির্দেশনা পেলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।