ঈদের কাপড় বেচাকেনায় সরগরম শেখের চর-বাবুরহাট

১৮ মে ২০১৯, ১১:৪৭ এএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম


ঈদের কাপড় বেচাকেনায় সরগরম শেখের চর-বাবুরহাট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারাদেশের পাইকারী ক্রেতার ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম দেশীয় পাইকারী কাপড়ের মার্কেট শেখেরচর-বাবুররহাট। ঐতিহ্যবাহি এই কাপড়ের বাজারটিতে রোজার এক সপ্তাহ আগে থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। বাজারটিতে নিয়মিত (বৃহস্পতিবার-রবিবার পর্যন্ত) সাপ্তাহিক হাটে দেড়শত থেকে দুই শত কোটি টাকা বেচাকেনা হলেও ঈদ উপলক্ষে বেচাকেনা বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশি হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন শেখের চর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি বাকির হোসেন।

শুক্রবার (১৭ মে) শেখেরচর-বাবুরহাটে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান সহ অন্যান্য গাড়ীতে বোঝাই করা হচ্ছে শাড়ী, লুঙ্গি, থ্রিপিসসহ দেশীয় সবধরনের কাপড়ের গাইট (আঁটি)। ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পাইকারী ক্রেতার ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে বাজারটি। পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন ডিজাইনের কাপড় সংগ্রহ করতে দোকানে দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত পাইকারী ক্রেতারা। বাজারের প্রতিটি গলিতে কাপড় আনা নেয়ায় ব্যস্ত ক্রেতা বিক্রেতারা। অনেকে এসেছেন পাইকারী দামে যাকাতের জন্য কাপড় কিনতে। পাশাপাশি ভিড় করছেন খুচরা ক্রেতারাও।

বিক্রেতারা জানান, বাজারটিতে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার দোকান রয়েছে। এসব দোকানে শাড়ী, লুঙ্গি, থ্রিপিস, থান কাপড়, বিছানা চাদর, শার্টপিস, প্যান্ট পিস, পাঞ্জাবির কাপড় ও গামছাসহ দেশীয় প্রায় সবধরণের কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদ উপলক্ষে প্রতিবারের মত এবারও কাপড়ের রং ও ডিজাইনে আনা হয়েছে বৈচিত্রতা।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারী ক্রেতারা আসতে শুরু করায় রোজার এক সপ্তাহ আগে থেকেই পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। দেশের কাপড় উৎপাদনকারী প্রায় সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একাধিক শো-রুম রয়েছে এখানে। এসব বস্ত্র কোম্পানীর বেশিরভাগ কারখানাও নরসিংদী জেলা কেন্দ্রিক। ফলে এখানকার উৎপাদিত কাপড়ের গুণগত মান ভাল হওয়ার পাশাপাশি দামেও সাশ্রয়ী। দেশের অন্যান্য স্থানে প্রস্তুতকৃত যাবতীয় কাপড়ও পাওয়া যায় এখানে।

চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের দেশীয় কাপড় পাওয়া যাওয়ায় এই হাটকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারী ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। রাজশাহী, বগুড়া, সিলেট, ফেনি, নোয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, জামালপুর, ভোলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্তের পাইকারী ক্রেতার ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে বাজারটি। ঈদকে ঘিরে আগে থেকেই ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সবধরণের কাপড় বেচা কেনায় ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা।

বাজারের পাইকারী কাপড় বিক্রেতা শেখ মোহাম্মদ রুমন বলেন, মূলত রোজার এক সপ্তাহ আগে থেকেই ঈদের কাপড় কেনার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা আসছেন। এবছর বেচাকেনা সন্তোষজনক বলেও জানান তিনি।

বাবুল আহমেদ বলেন প্রিন্টিং ও গজ কাপড় বিক্রেতা বাবুল আহাম্মেদ বলেন, শাড়ী, গজ কাপড়ের বেচাকেনা আগেভাগেই হয়। পাশাপাশি শাড়ী, লুঙ্গি ও থ্রিপিসের বেচাকেনা চলে ঈদের আগের সপ্তাহ পর্যন্ত।

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা থেকে আসা খুচরা কাপড় ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, খুচরা বাজারে এখনও পুরোদমে কেনাকাটা শুরু হয়নি। দোকানের জন্য বাবুরহাট থেকে পাইকারী দামে ঈদের কাপড় কেনার জন্য এসেছি।

ঢাকার উত্তরা থেকে আসা ইকবাল আহমেদ বলেন, যাকাতের কাপড় কেনার জন্য এখানে এসেছি। ঢাকার তুলনায় এখানে দামটা কম হওয়ায় এখানে কেনাকাটার জন্য আসি।

শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি বাকির হোসেন বলেন, বাজারটিতে নিয়মিত (বৃহস্পতিবার-রবিবার পর্যন্ত) সাপ্তাহিক হাটে দেড়শত থেকে দুইশত কোটি টাকা বেচাকেনা হলেও ঈদ উপলক্ষে বেচাকেনা বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশি হয়। এ বছর ঈদ উপলক্ষে সন্তোষজক বিক্রির কারণে ব্যবসায়ীরা খুশি। ঈদ উপলক্ষে দিন ও রাতে এই হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।



এই বিভাগের আরও