পবিত্র হজ বৃহস্পতিবার

২৯ জুলাই ২০২০, ০৭:০৫ পিএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম


পবিত্র হজ বৃহস্পতিবার
ফাইল ছবি

জীবনযাপন ডেস্ক:

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে এবার পবিত্র হজ পালিত হচ্ছে ভিন্ন আবহে, সীমিত পরিসরে। মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। হজযাত্রীরা বুধবার মিনায় অবস্থান করছেন। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আগামীকাল বৃহস্পতিবার আরাফাতের ময়দানে।

এবার সৌদি আরবের বাইরে থেকে গিয়ে কেউ হজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি। সৌদি আরবে অবস্থানরত মাত্র ১০ হাজার মুসলমান এ সুযোগ পাচ্ছেন, যেখানে গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজ পালন করেছিলেন। এবার যাঁরা হজের সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসী।

পবিত্র হজ পালনের জন্য সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা গতকাল সন্ধ্যার পরপরই পবিত্র মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ) থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনায় পৌঁছেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়তে তাঁদের মুখে ছিল, লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাকা। মিনার খিমায় (তাঁবু) রাত কাটান তাঁরা।

হজযাত্রীরা আজ মিনাতেই নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করবেন। আগামীকাল ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করে মিনা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে যাবেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান সেখানে করবেন। এরপর সেখান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন এবং জীবাণুমুক্ত পাথর সংগ্রহ করবেন। ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরবেন।

হাজিরা বড় শয়তানকে পাথর মারবেন, কোরবানি দেবেন, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ (সৌদি আরবের তারিখ অনুযায়ী) পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন তাঁরা। প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়। প্রথমে জামারায় সগির বা ছোট শয়তান, তারপর জামারায় ওস্তা বা মেজ শয়তান, এরপর জামারায় আকাবা বা বড় শয়তানকে।

করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) থেকে রক্ষা পেতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। হজের জন্য মনোনীতদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। হজ শুরুর আগেই দুই ধাপে কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হজে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজকদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে এ বছর হজের সময় কাবা শরিফ স্পর্শ বা চুম্বন নিষিদ্ধ থাকবে। হজের প্রতিটি কাজে একজন থেকে অন্যজনের শারীরিক দূরত্ব থাকবে ১.৫ মিটার (পাঁচ ফুট)। তাওয়াফ, নামাজ, সাঈ প্রতিটি কাজেই এই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ ছাড়া মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় ২ আগস্ট পর্যন্ত হাজিদের জন্য অবস্থান নির্ধারিত থাকবে।

এবার হজের খুতবা দেবেন ৯২ বছরের প্রবীণ শায়খ ড. আব্দুল্লাহ ইবনে সুলাইমান আল-মানিয়া। হজের খুতবা দেয়া ইমাম ও খতিবদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ব্যক্তি। হজের দিন মসজিদে নামিরায় মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শায়খ ইমাদ বিন আলি ইসমাইল। তিনি মসজিদের হারামের নিয়মিত মুয়াজ্জিন।

মহামারি করোনার কারণে এবারের হজ সবার জন্য স্বাচ্ছন্দ্য ও আরামদায়ক। এবারের অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবেই পালন করবেন হজ। তালবিয়া ও তাকবিরের ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান। এবারের হজে অংশগ্রহণকারীদের জন্য শুভ কামনা রইল।


বিভাগ : জীবনযাপন


এই বিভাগের আরও