বাংলাদেশি সাঈদুর বিশ্বের সেরা চার গবেষকের একজন

২০ নভেম্বর ২০২০, ০৬:২৬ পিএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০১:০৬ পিএম


বাংলাদেশি সাঈদুর বিশ্বের সেরা চার গবেষকের একজন

ডেস্ক রিপোর্ট:

এবার বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় স্থান করে নিলেন বাংলাদেশি অধ্যাপক সাঈদুর রহমান। গত ১৮ নভেম্বর ল্যাঙ্কাস্টার জরিপে ২০২০ সালের সেরা চারজন গবেষকের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঠাঁই পেলেন তিনি।

সেরা চারজন গবেষক হলেন- রয়্যাল সোসাইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিক গ্রাহাম, ক্রপ সায়েন্সেসের অধ্যাপক স্টিভ লং, মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোমেটেরিয়ালস এবং এনার্জি টেকনোলজির অধ্যাপক সাইদুর রহমান ও ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক জেস চুয়া। বাংলাদেশের সাঈদুর রয়েছেন সেরা চারে।

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণায় পুরস্কারও পেয়েছেন সাঈদুর। তিনি ল্যাঙ্কাস্টারের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শক্তি প্রযুক্তি বিভাগ এবং মালয়েশিয়ার সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোম্যাটরিয়ালস অ্যান্ড এনার্জি টেকনোলজির অধ্যাপক। তার কাজের মধ্যে ল্যাঙ্কাস্টারের এনার্জি রিসার্চ গ্রুপের নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য ন্যানোম্যাটরিয়ালের গবেষণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিশ্বের পাঁচ শতাধিক জার্নালে তার গবেষণা প্রকাশ করেছে। ল্যাঙ্কাস্টারে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি প্রায় ৫০০টি জার্নালে নিবন্ধ, কার্যপত্রিকা, বইয়ের অধ্যায় এবং একটি ল্যাঙ্কাস্টারের অধিভুক্তির সঙ্গে পর্যালোচনা প্রকাশ করেছেন।

তার গবেষণাপত্র বিশ্বের অন্যান্য গবেষকদের কাছে সব থেকে সমাদৃত। তার গবেষণা কাজগুলো ৩৬,০০০ হাজারেরও বেশি উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। ওয়েব অব সাইন্স ন্যানোফ্লুয়েড গবেষণায় তিনি প্রথম স্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

সাঈদুর রহমান ল্যাঙ্কাস্টার এবং সানওয়ের মধ্যে সহযোগী সংযোগগুলো প্রচার করেন এবং এমএক্সেনে ন্যানোফ্লুয়েড এবং ঘন সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সরকার তার গবেষণাকে গ্রহণ ও প্রয়োগ করে। নিউটন তহবিল গবেষণা কাজে সহযোগিতা করে।

ল্যাঙ্কাস্টারের রাসায়নিক প্রকৌশল এবং শক্তি গবেষণা দলগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন। মেন্ডেলি ডাটাবেস দ্বারা প্রকাশিত বৈশ্বিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি যান্ত্রিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে ৪৯ এবং শক্তি ক্ষেত্রে ৫০তম স্থান অর্জন করেছেন।

ডিপার্টমেন্ট অব বিজনেস পলিসি, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড আকাউনটেনসি, ইউনিভার্সিটি অব মালায়ার পিএইচডি গবেষক মো. সোহেল রানা বলেন, অধ্যাপক সাইদুর রহমান ক্ল্যারিভেট কর্তৃক প্রকাশিত উচ্চতর উদ্ধৃত বার্ষিক গবেষক তালিকায় প্রথম। প্রকাশিত তালিকায় অধ্যাপক সাইদুর রহমান গত দশকে একাধিকবার উচ্চ উদ্ধৃত গবেষকের স্বীকৃতি পেয়েছেন যা কাজের মেধা ও প্রজ্ঞা ও ভবিষ্যত পৃথিবীর প্রয়োজনে দিক-নির্দেশনার প্রকাশ করে। এটি আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দ, অনুপ্রেরণা ও গর্বের বিষয় যে তিনি গবেষণা ক্ষেত্রে অনন্য নক্ষত্রের ভূমিকা পালন করে চলেছেন।

তিনি বলেন, তার এই অনন্য অর্জনে গবেষণা ক্ষেত্রে নতুন গবেষক তথা সকল বাংলাদেশি গবেষকদের মধ্যে নতুন নতুন গবেষণা লব্ধ জ্ঞান সৃষ্টিতে প্রেরণা যোগাবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, গবেষকদের উদ্দেশ্য অধ্যাপক সাঈদুর রহমান বলেছেন, আমার গবেষণার অভিজ্ঞতাটি ভাগ করে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, আমি আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হব। তিনি তার মেধা বাংলাদেশে কাজে লাগাতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন।

একটা সময় ছিল দরিদ্রপীড়িত বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনত, এরপর কায়িক পরিশ্রম করা কর্মীদের দেখছে বিশ্ব। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে যে মেধার ও কৃতীত্বের বিস্ফোরণ দেখাচ্ছে বাংলার মেধাবী সন্তানরা সেসব প্রকাশ পাচ্ছে এখন। এ যেন সেই একাত্তর সালের স্বাধীনতা অর্জনের মতোই। যার যা আছে তাই নিয়ে লড়াই করে বিশ্বের বুকে কৃতীত্ব দেখিয়েছে।

তিনি বলেন, এনার্জি এখন বিশ্বের অন্যতম অনুষঙ্গ, উন্নয়নের বা ভোগের অন্যতম চালিকা শক্তি। অল্প বিনিয়োগে অধিক এনার্জি উৎপাদন, টেকসই উন্নয়ন এ গবেষণা এবং এর প্রয়োগের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতা হতে পারে। বাংলাদেশি গবেষকদের জন্য অনলাইন গবেষণা সেমিনার সময়ে সময়ে আয়োজন করা যেতে পারে।

ময়মনসিংহ জেলার কৃতি সন্তান, অধ্যাপক সাইদুর রহমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।



এই বিভাগের আরও