আসছে বিশ্বমন্দা, অর্থনীতিতে সাত সংকট
২১ অক্টোবর ২০২২, ১০:১৭ এএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ এএম
অর্থনীতি ডেস্ক:
করোনার সংকট ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। বহুমুখী এই সংকটের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে আবারও মন্দা আসছে। এতে খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশসহ ৪৫টি দেশ
জাতিসংঘের সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (ফাও)’ বলছে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ আসছে। ক্রমেই পরিস্থিতি ওইদিকেই যাচ্ছে।
সামগ্রিকভাবে বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৭টি সংকট বিরাজ করছে। ডলার সংকট, জ্বালানির উচ্চমূল্য, অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ ও করোনা পরিস্থিতি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মূল্যায়নে উঠে এসেছে এসব বিষয়। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে খাদ্যের দাম দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ইতোমধ্যে দেশের মানুষ খাবার কমিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
ইতিহাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি। লাগামহীনভাবে বাড়ছে। দ অনুমান করা যাচ্ছে না কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এ অবস্থায় সব খাতে মজুরি বা বেতন বাড়াতে হবে।
সিপিডির নিজস্ব কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার অর্থনীতির ওপর এই মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ফাও’য়ের রিপোর্ট বলছে দুর্ভিক্ষ আসছে। বিষয়টি আসলে সত্য। কারণ একদিকে সংকট, অপরদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি আবহাওয়া ভিন্নরূপ হিসাবে বন্যা, খরা বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানি ও সার ব্যবহার করা হয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে শুধু পণ্য সরবরাহে সমস্যা হয়নি, কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। খাদ্য সংকট মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশে এখন বহুমুখী সংকট রয়েছে, তাই বহুমুখী নীতিমালাও প্রয়োজন। সব মন্ত্রণালয় এ বিষয়টির সঙ্গে জড়িত। সবার সমন্বয়ে একটি কমিটি থাকা দরকার।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি চাকরিজীবী বা অন্য পেশার লোকজনকেও এ কমিটিতে রাখা উচিত। ‘সরকার ওএমএসসহ যেসব পণ্য দিয়েছে, তা সারা দেশে সহজলভ্য করতে হবে। এখানে দুর্নীতি যেন না হয়, সেটা অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, নিম্নআয়ের মানুষকে নগদ সহায়তা দিতে হবে। একেবারেই দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমপক্ষে ১ হাজার টাকা করতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা দরকার।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মূল্যস্ফীতির লাগামহীন অবস্থা। দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু আমদানি পণ্য নয়, দেশে উৎপাদিত পণ্যর দামও বেশি। এটা কমার কোনো লক্ষণ নেই। খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুটি কাছাকাছি অবস্থান করছে। তবে বাজারের চিত্রে দেখা যায় সরকারি হিসারের চেয়ে পণ্যের প্রকৃত মূল্য আরও বেশি। ফলে প্রকৃত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা উচিত।
‘করোনার সময় থেকে জিনিসপত্রের উচ্চমূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। দেশে বেশিরভাগ পণ্য ও সেবায় দক্ষিণ এশিয়ার গড় দামের চেয়েও বেশি। এমনকি অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলংকার চেয়ে বেশি মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আধা কেজি পাউরুটির দাম ৬২ টাকা, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এ দাম পাকিস্তানে ৪৫ টাকা, ভারত ও নেপালে ৪৮ টাকা, এমনকি শ্রীলংকাতেও ৫০ টাকা, যা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গরুর মাংসের গড় মূল্য কেজিপ্রতি ৬৮৪ টাকা, যেখানে বিশ্বে গরুর মাংসের গড় দাম ৫৪৯ টাকা। পাকিস্তানে এক কেজি গরুর মাংস ৩৭৫ টাকা, ভারতে ৫৮০ টাকা, নেপালে ৪৬৫ টাকা এবং শ্রীলংকায়ও ৫৪৫ টাকা।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ঢাকায় যারা বসবাস করছেন, তাদের খাদ্যপণ্যের তালিকার ১৯টি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রয়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ৪ সদস্যের একটি পরিবারের অত্যাবশ্যকীয় সব খাদ্যপণ্যসহ সার্বিক খরচ ছিল ১৭ হাজার ৫৩০ টাকা। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবরের খাদ্যপণ্যের মূল্য বিবেচনায় এ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাসিক ২২ হাজার ৪২১ টাকা।
অন্যদিকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে কমপ্রোমাইজড ডায়েট বা আপসের খাদ্য তালিকা হিসাবে ৪ সদস্যের পরিবারের ন্যূনতম খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৯ টাকায়। যা ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ছিল ৬ হাজার ৫৪১ টাকা।
সংস্থাটি বলছে, আমদানি করা কোনো কোনো পণ্যে ১০ থেকে ৯০ শতাংশ কর রয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতির ওপর। এই কর কমানো হলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমত। সিপিডি আরও বলছে, বর্তমানে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের আমদানি খরচ বেশি। এজন্য আমদানিতে বিকল্প বাজার দেখতে হবে। অর্থাৎ ওই পণ্য অন্য কোনো দেশ থেকে আনতে হবে। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তি পকেট থেকে ব্যয় করে বেশি। সরকার খরচ করে কম।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিশ্ববাজারের জ্বালানির ভুক্তভোগী আমরা। কিছুদিন আগে মূল্য দিয়ে জ্বালানি পাওয়া গেলেও এখন সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না। লোডশেডিং ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের উন্নয়নশীল সব দেশ জ্বালানি আমদানি করে। ডলার-সংকটের কারণে আগস্ট থেকে অক্টোবর জ্বালানি আমদানি কমেছে।
সূত্র- দৈনিক যুগান্তর
বিভাগ : অর্থনীতি
- রেডি টু কুক মৎস্যপণ্য উৎপাদন গবেষণা আরও জোরদার করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
- নরসিংদীতে পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠন
- নরসিংদীতে সততা চর্চার অভ্যাস গড়তে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতা
- বেলাবতে অনুপস্থিতিসহ দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি
- মাধবদীতে জুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩
- এক দফার আন্দোলন শুধু দুই মাসের নয়, ১৬ বছরের আন্দোলন: খায়রুল কবির খোকন
- নরসিংদীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপির বর্ণাঢ্য র্যালি
- স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
- যক্ষ্মারোগ নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময়
- আওয়ামী লীগ ভেবেছিল তারা চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে: খায়রুল কবির খোকন
- রেডি টু কুক মৎস্যপণ্য উৎপাদন গবেষণা আরও জোরদার করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
- নরসিংদীতে পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠন
- নরসিংদীতে সততা চর্চার অভ্যাস গড়তে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতা
- বেলাবতে অনুপস্থিতিসহ দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি
- মাধবদীতে জুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩
- এক দফার আন্দোলন শুধু দুই মাসের নয়, ১৬ বছরের আন্দোলন: খায়রুল কবির খোকন
- নরসিংদীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপির বর্ণাঢ্য র্যালি
- স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
- যক্ষ্মারোগ নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময়
- আওয়ামী লীগ ভেবেছিল তারা চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে: খায়রুল কবির খোকন