২৫০০ টাকা সহায়তা পেতে ২২০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে: টিআইবি
১০ নভেম্বর ২০২০, ০৭:০৫ পিএম | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৩ এএম

টাইমস ডেস্ক:
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুই হাজার ৫০০ টাকার নগদ সহায়তা পেতে প্রত্যেক উপকারভোগীকে ২২০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। আর নগদ সহায়তার তালিকাভুক্ত হতে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হতে হয়েছে ১২ শতাংশ উপকারভোগীকে।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) অনলাইনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আয়োজিত করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় চ্যালেঞ্জ দ্বিতীয় পর্বের গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার মো. জুলকারনাইন।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের মধ্যে নগদ অর্থ প্রণোদনার অনিয়মের বিষয়ে দেশের ৩৫টি জেলার এক হাজার ৫০ জনের মধ্যে বক্তব্য নিয়েছে টিআইবি। এছাড়া ওএমএস কার্ডে অনিয়ম নিয়ে ৩২ জেলার ৯৬০ জনের মতামত নিয়েছে টিআইবি। চলতি বছরের ১৬ জুন থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত টিআইবির এ গবেষণা করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে নগদ সহায়তা উপকারভোগীদের ১২ শতাংশ তালিকাভুক্ত হতে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তির সুপারিশ যোগাড় করা (৩৬ দশমিক এক শতাংশ), অনেকবার অনুনয়-বিনয়/অনুরোধ করা (২৪ দশমিক ৬ শতাংশ), নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ বা ঘুষ দেওয়া (১৮ দশমিক ৯ শতাংশ), টাকা না পাওয়া (১০ দশমিক ৬ শতাংশ) ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। আর তালিকাভুক্ত হতে গড়ে ২২০ টাকা করে নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ বা ঘুষ দিতে হয়েছে।
অন্যদিকে জরিপে কার্ডের মাধ্যমে বিশেষ ওএমএস চাল (১০ টাকা কেজি দরে) সহায়তায় উপকারভোগীদের ১০ শতাংশ তালিকাভুক্ত হতে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তির সুপারিশ যোগাড় করা (৩৭ দশমিক এক শতাংশ), অনেকবার অনুনয়-বিনয়/অনুরোধ করা (২০ দশমিক ৬ শতাংশ), নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ বা ঘুষ দেওয়া (১৫ দশমিক ৫ শতাংশ) ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
জরিপে নগদ সহায়তায় উপকারভোগীদের ৫৬ শতাংশ সহায়তা পেতে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছিল। এক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরনের মধ্যে তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এখনও টাকা না পাওয়া (৬৯ দশমিক শুন্য শতাংশ), মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট কমিশন/ফি বাবদ গড়ে ৬৮ দশমিক ২০ টাকা করে কেটে রাখে। এক প্রতিবেদন হতে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের কাছ থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়।
জরিপে ওএমএস (চাল) সহায়তায় উপকারভোগীদের ১৫ দশমিক শূন্য শতাংশ চাল পেতে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছিল।
এক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরনের মধ্যে ছিল, পরিমাণে কম দেওয়া (৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ), তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাল কিনতে না পারা (২০ দশমিক ৬ শতাংশ), তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাল কিনতে না পারা (২০ দশমিক ৬ শতাংশ), ওজন না করে বালতিতে অনুমান করে চাল দেওয়া (১৯ দশমিক ৯ শতাংশ) ইত্যাদি।
নগদ সহায়তা কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান/মেম্বার/কাউন্সিলর (৭৯ দশমিক ২ শতাংশ) ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা (৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ)। বিশেষ ওএমএস (চাল) বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে সংসদ সদস্য, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান/মেম্বার/কাউন্সিলর (৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ) ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার (৪০ দশমিক ১ শতাংশ) ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার (৪০ দশমিক ১ শতাংশ) সম্পৃক্ততা ছিলো বলে জানায় সুবিধাভোগীরা।
করোনাকালীন যেসব জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে, তাদের ৯০ জনই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল। একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, দুর্নীতিদমন কমিশনের (দুদক) সরাসরি ও হটলাইনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে, তারা প্রকৃত দুস্থঃদের বঞ্চিত করে করোনাকালে সরকারের দেওয়া ত্রাণ ও নগদ অর্থ সহায়তাসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
করোনাকালীন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে এ পর্যন্ত শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সাময়িক বরখাস্ত করে। তবে জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই (অন্তত ৩০ জন) উচ্চ আদালতে রিটের মাধ্যমে স্বপদে ফিরে এসেছে। এর কারণ হিসেবে অনেকক্ষেত্রে আদালতে জোরালোভাবে তথ্য উপস্থাপন না করা, সরকারপক্ষের আইনজীবীর আদালতে উপস্থিত না হওয়া, আসামিপক্ষ বা বরখাস্ত চেয়ারম্যানদের পক্ষের আইনজীবীদের জোরালোভাবে বরখাস্তের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সরকারের বরখাস্ত আদেশ স্থগিত করে রায় দেয়।
সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সাময়িক বরখাস্ত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণসহ মামলা পরিচালনা করতে হবে। এসব জনপ্রতিনিধিদের পরবর্তী যেকোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বিভাগ : বাংলাদেশ
- ৪৫ কেজি গাঁজাভর্তি গাড়ীসহ ১ জন আটক
- নরসিংদীতে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলা, ৭ জন গ্রেপ্তার
- চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক দুইজনকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা
- নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে মনজুর এলাহীর গণসংযোগ
- আলোকবালীতে ফের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১০
- দূর্গাপূজায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার আহবান খায়রুল কবির খোকনের
- হাসপাতালে ভাংচুর ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- আ.লীগ বন্ধু সেজে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতি করেছে :ড. মঈন খান
- শিবপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে যুবক নিহত
- ঘোড়াশাল রেলসেতুতে ট্রেনে কাটাপড়ে নারী নিহত
- ৪৫ কেজি গাঁজাভর্তি গাড়ীসহ ১ জন আটক
- নরসিংদীতে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলা, ৭ জন গ্রেপ্তার
- চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক দুইজনকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা
- নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে মনজুর এলাহীর গণসংযোগ
- আলোকবালীতে ফের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, আহত ১০
- দূর্গাপূজায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার আহবান খায়রুল কবির খোকনের
- হাসপাতালে ভাংচুর ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- আ.লীগ বন্ধু সেজে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতি করেছে :ড. মঈন খান
- শিবপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে যুবক নিহত
- ঘোড়াশাল রেলসেতুতে ট্রেনে কাটাপড়ে নারী নিহত