নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রুখতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

২৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:১৯ পিএম | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ পিএম


নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রুখতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এমপি বলেছেন, “বৈষয়িক উন্নয়ন বাংলাদেশে অনেক হয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এসেছে অনেকটাই। কিন্তু নৈতিকতা ও মূল্যবোধের মুক্তির কাঙ্ক্ষিত জায়গায় আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে না পারলে সভ্যতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এ অবক্ষয় রুখতে হবে। জাতিকে এ অবক্ষয় থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি তিতুমীর কলেজের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘আলোকিত ৫০ বছর’ শিরোনামে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, “শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, শিক্ষার্থীদের সততা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং দেশপ্রেমের শিক্ষা দিতে হবে। এ চারটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটাতে পারলে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা জাতির ভবিষ্যৎ রচনায় স্বপ্ন দেখতে পারি। এ স্বপ্ন দেখতে না পারলে ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্ত, দুই লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগ এবং আমাদের মহান নেতৃবৃন্দের আত্মোৎসর্গ অর্থহীন হয়ে যাবে।”

সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “রাজনীতিতে একটি খারাপ সংস্কৃতি চালু হয়েছে। তা হলো, রাজনীতিতে এলেই বিত্ত-বৈভব, বাড়ি-গাড়ি, কয়েকটি কোম্পানির মালিক, শত শত কোটি টাকার মালিক হতে হবে। পদ-পদবী পেতেই হবে। এটা রাজনীতির মূল সংস্কৃতি নয়। নিজেকে উৎসর্গ করার নাম রাজনীতি। পরার্থে নিজেকে নিবেদন করার নাম রাজনীতি।”

তিনি আরো বলেন, “একসময় বলা হতো বাংলাদেশকে হবে দরিদ্রতার রোল মডেল। অথচ আজ বিশ্ব নেতৃত্ব বলেন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই রোল মডেলের বাংলাদেশকে পরিপূর্ণতা দিতে হলে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, ইমারত নির্মাণের মতো বৈষয়িক উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। অবৈধ অর্থ উপার্জনকারীদের সম্পর্কে ঘৃনার উদ্রেক করতে হবে। মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিংকে যারা প্রশ্রয় দেন, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। অন্যায়ভাবে সম্পত্তি আরোহণ করা, যেনোতেনো উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া, যেকোন মূল্যে সরকারি সম্পত্তি লুন্ঠন করা-এসব প্রবণতা রুখতে আমাদের মানসিকভাবে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন।”

জনগণের জন্য সরকার। সরকারের জন্য জনগণ নয়। শেখ হাসিনা সরকার এ ধারণায় বিশ্বাস করেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “শিক্ষা বিস্তারে যদি ভূমিকা রাখতে না পারি তাহলে মন্ত্রীত্ব অর্থহীন হয়ে যাবে। যে জাতি প্রকৃতপক্ষে শিক্ষিত নয়, যে জাতি নৈতিকতার মানদন্ডে উচ্চ জায়গায় পৌঁছাতে পারে না, তাকে বিশ্বে মূল্যায়ন করে বলা হয় এ রাষ্ট্র, এ সমাজ অনেকদূর এগোতে পারেনি। একটি শিক্ষিত সমাজই দিতে পারে একটি ভালো রাষ্ট্র। একটি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্র দিতে পারে ভবিষ্যতের অপার সম্ভাবনার হাতিছানি। সে স্বর্ণালী জায়গায় আমরা সকলকে নিয়ে পৌঁছাতে চাই।”

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরকারি তিতুমীর কলেজের পঞ্চাশ বছর উদযাপন উৎসবের আহ্বায়ক ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশী, এমপি, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, বীরপ্রতিক, মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বীরপ্রতিক, প্রাক্তন ভিপি মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইয়নিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য, কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আশরাফ হোসেন, উপাধ্যক্ষ ড. আবেদা সুলতানা প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও