শিবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত

২৫ জুলাই ২০২১, ০৯:১২ পিএম | আপডেট: ০২ মে ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম


শিবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত

মোমেন খান:

নরসিংদীর শিবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো: হারুন মিয়া (৪০) নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কামারটেক বাসস্ট্যান্ড বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত হারুন রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন।

মো. হারুন মিয়া যোশর ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কামারটেক বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী। তিনি শিবপুরের যোশর ইউনিয়নের কামারটেক গ্রামের আবদুল মোতালিব মিয়ার ছেলে।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কামারটেক বাজারে রাস্তার পাশে পাঁচ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছিল। ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ওই জমি হেলাল ভূঁইয়ার কাছে বিক্রি করেন শাফী ভূঁইয়া। জমি কিনতে হেলাল ভূঁইয়াকে আর্থিক সহযোগিতা করেন দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। কিন্তু ওই জমিটি ভোগদখলে ছিল শাফী ভূঁইয়ার আত্মীয় শিশু ভূঁইয়া ও মাছুম ভূঁইয়া নামের দুই ব্যক্তি। সম্প্রতি ওই জমিতে একটি একতলা মার্কেটের নির্মাণকাজ শুরু করেন হেলাল ও দেলোয়ার। এর দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় হারুন মিয়াকে। কিন্তু এই জমিতে স্থাপনা নির্মাণে স্থিতিবস্থা রাখতে আদালতের আদেশ আনেন মাছুম ভূঁইয়া। সেই আদেশ দেখানোর পরও হারুন মিয়ার তত্ত্বাবধানে ওই মার্কেটের নির্মাণ কাজ চলছিল।

শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ওই মার্কেটে রাজমিস্ত্রিরা কাজ শুরু করেছিলেন। পরে শিবপুর থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। এরপরও শনিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও তারা কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। এতে উত্তেজিত হয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশু ভূঁইয়া ও মাছুম ভূঁইয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা, চাপাতি ও রড নিয়ে হারুন মিয়া ও হেলাল ভূঁইয়ার ওপর হামলা করে। হামলার সময় ১৫-২০ জন ব্যক্তি অংশ নেন। এ সময় হেলাল ভূইয়া দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ব্যবসায়ী হারুন মিয়ার ডান পায়ের রগ কেটে পা এবং হাত ভেঙ্গে ফেলা হয়। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথাসহ সারা শরীরে কোপানো হয়।

আহত মো. হারুন মিয়ার ছোটভাই মোস্তফা মিয়া জানান, হামলার ঘটনার পরই তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ৫২টি সেলাই দিতে হয়েছে। রবিবার দুপুরে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।

অভিযুক্ত শিশু ভূঁইয়া ও মাছুম ভূঁইয়া ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাদের ফোন নাম্বারও বন্ধ। একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিবারের লোকজনও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

শিবপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. মুরাদ হোসেন জানান, বিবদমান জমিতে মার্কেট নির্মাণের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মার্কেটটিতে কাজ চলছিল। হামলার ঘটনায় শিবপুর থানায় আমরা এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।