পলাশে ছেলের অট্টালিকায় ঠাই না হওয়া বৃদ্ধ মাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ: সাংবাদিককে পুত্রবধুর হুমকি

২৩ জুন ২০১৯, ০৬:১৬ পিএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ এএম


পলাশে ছেলের অট্টালিকায় ঠাই না হওয়া  বৃদ্ধ মাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ: সাংবাদিককে পুত্রবধুর হুমকি

পলাশ প্রতিনিধি ॥
নরসিংদীর পলাশে ছেলের অট্টালিকায় ঠাই হলো না শতবর্ষী বৃদ্ধ মায়ের-এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় সাংবাদিক নূরে আলম রনিকে কোটি টাকা খরচ করে শায়েস্তা করাসহ প্রাণণাশের হুমকি দিয়েছেন ওই বৃদ্ধার পুত্রবধু লিপি আক্তার। এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন ওই সাংবাদিক।


বিভিন্ন অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর শনিবার (২২ জুন) রাতে মোবাইলে ফোন করে সাংবাদিক রনিকে এ হুমকি দেন বৃদ্ধার পুত্রবধু লিপি আক্তার। রনি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি ও পলাশ উপজেলা রিপোর্টার্স কাবের সভাপতি।


সাংবাদিক নূরে আলম রনি জানান, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পলাশ বাজার এলাকার মৃত মজনু মিয়ার স্ত্রী প্রায় শতবর্ষী মরিয়ম বেগমকে তাঁর একমাত্র ছেলে স্থানীয় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ও ঘোড়াশাল পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কিরন শিকদার তার স্ত্রীর কথায় গত রমজান মাসে পার্শ্ববর্তী নতুন বাজার এলাকার জনৈক গফুর মিয়ার একটি ভাঙ্গা টিনের ঘরে রেখে যান। অথচ কিরণ শিকদারের নিজস্ব একটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে এমন তথ্য পেয়ে আমিসহ কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাই। সেখানে ওই বৃদ্ধার ছেলে মাঝেমধ্যে কিছু বাজার সদাই কিনে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন এবং বৃদ্ধা মরিয়মের দেখাশোনা করেন পাশের ভাড়াটিয়ারা।


এ অমানবিক ঘটনা নিয়ে পলাশ উপজেলা ও জেলার সাংবাদিকরা স্ব স্ব অনলাইন গণমাধ্যম ও পত্রিকায় ছেলের বক্তব্যসহ সংবাদ প্রকাশ করেন। এতে ওই বৃদ্ধার পুত্রবধু লিপি আক্তার আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইলে ফোন করে (২৮ মিনিট) আমাকে হুমকি দেন।
এসময় লিপি আক্তার হুমকির সুরে বলেন- এসব সংবাদ বন্ধ কর, তা না হলে এক কোটি টাকা খরচ করে হলেও শায়েস্তা করবো। আমার শাশুড়িকে আমি প্রয়োজনে জঙ্গলে রাখবো তাতে তর কি?। ওই বাড়িতে গেলি কেন? এতো মায়া লাগলে নিজের বাড়িতে নিয়ে রাখ।
এ হুমকির ঘটনায় রোববার (২৩ জুন) দুপুরে পলাশ থানায় লিপি আক্তারের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডাইরী (জিডি) করেছি।


এদিকে সংবাদটি রবিবার (২৩ জুন) বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি নরসিংদী পুলিশ সুপারের নজরে আসে। এই অমানবিক ঘটনায় বৃদ্ধার ছেলে কিরণ শিকদারকে আটক করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ। পরে পলাশ থানা পুলিশ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কিরণ শিকদারকে আটক করে।


এ ব্যাপারে পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম মস্তফা জানান, বৃদ্ধা মাকে নির্জন অন্ধকার ঘরে ফেলে রাখার ঘটনায় ওই বৃদ্ধার ছেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সাংবাদিককে হুমকির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এই বিভাগের আরও