পলাশে ভাড়ার মেয়াদ শেষে হিন্দু পরিবারের পুকুর জবরদখলের অভিযোগ

১৪ জুন ২০১৯, ০৩:১০ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ এএম


পলাশে ভাড়ার মেয়াদ শেষে হিন্দু পরিবারের পুকুর জবরদখলের অভিযোগ
ভাড়ায় দেয়া পুকুর ফেরত পাচ্ছেন না চিত্ররঞ্জন দাস

পলাশ প্রতিনিধি ॥
নরসিংদীর পলাশে এক হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ওই হিন্দু পরিবারটি। এ বিষয়ে থানা পুলিশও অজানা কারণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের পাঁচভাগ গ্রামের চিত্ররঞ্জন দাসের কাছ থেকে দুটি পুকুরের ৪১ শতাংশ সম্পত্তি পাঁচ বছরের জন্য লিজ (ভাড়া) হিসেবে নেয় পার্শ¦বর্তী উত্তরচন্দন গ্রামের আক্তারুজ্জামান। লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হলেও ওই হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। নিজের লিজ দেওয়া সম্পত্তি ফিরে পেতে গিয়ে ভয়ভীতি ও হামলার শিকার হচ্ছেন ওই পরিবার। সম্প্রতি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পর ওই পরিবারের ওপর হয়রানী আরও বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারপি।


ভুক্তভোগী চিত্ররঞ্জন দাস জানান, পারিবারিক সমস্যার কারণে বছরে ২০ হাজার টাকা ভাড়ায় ৩০ শতাংশের একটি পুকুর ও বছরে আট মন ধান পাওয়ার আশ্বাসে ১১ শতাংশের একটি পুকুরসহ মোট ৪১ শতাংশের দু’টি পুকুর পাঁচ বছরের জন্য লিজ দেয়া হয়। পার্শ্ববর্তী উত্তরচন্দন গ্রামের মৃত জব্বার মিয়ার ছেলে আক্তারুজ্জামান এ পুকুর দুটি লিজ নেন। পুকুর দুটি নেয়ার সময় আক্তারুজ্জামান ১ লাখ টাকা নগদ প্রদান করেন। কিন্তু বছরে আট মন ধান দেওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে টালবাহানা শুরু করে।
পরে পুকুর দু’টির পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকেই পুকুরের দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য আক্তারুজ্জামানকে একাধিকবার জানানো হয়। কিন্তু লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে আরও পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও তিনি পুকুর ছাড়ছেন না। তারা এখন জোরপূর্বক আমাদের সম্পত্তি জবরদখলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি আক্তারুজ্জামান ও তার ছেলে দুলাল মিয়াকে পুকুর ছাড়তে বলা হলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকিসহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে। থানা পুলিশও অজানা কারণে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য (সংরক্ষিত) নার্গিস আক্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সামাজিক শালিস বৈঠকে আক্তারুজ্জামান ও দুলাল মিয়াকে মীমাংসায় বসার জন্য বলা হলেও তারা প্রভাব দেখিয়ে বসেননি।


এ বিষয়ে আক্তারুজ্জামানের ছেলে দুলাল মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পুকুর দু’টি পাঁচ বছরের জন্য লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি নতুন করে আবারও পাঁচ বছরের জন্য ওই ৪১ শতাংশ সম্পত্তি লিজ নিয়েছেন বলে দাবী করেন।


এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, সম্পত্তি জবরদখলের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য থানার এক উপপরিদর্শক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এই বিভাগের আরও