আগামী বছর থেকে পালিত হবে ভোটার দিবস

১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৩৮ এএম | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ এএম


আগামী বছর থেকে পালিত হবে ভোটার দিবস
বছরের প্রথম দিন অথবা জুলাইয়ের ৭ তারিখকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে পালনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের অনুমোদনের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠিত হয়। আর ভোটার হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ১ জানুয়ারিতে ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর হচ্ছে কি না- তা বিবেচনা করে ইসি। এ কারণেই ১/১ অথবা ৭/৭- তারিখ দুটি নিয়ে ইসির আগ্রহ। সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি নাগরিকদের ভোটার করার পাশাপাশি নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে আছে। এ অঞ্চলের দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও আফগানিস্তান ভোটার দিবস পালন করলেও বাংলাদেশে এখনও তা চালু হয়নি। গত ২৮ নভেম্বর কমিশন সভার পর ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “ভোটার হতে নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করতে বছরের একটি দিনকে ভোটার দিবস পালনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।” এই দিবস পালনের উদ্যোগের পেছনে ইসির যুক্তি হচ্ছে- অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নির্ভুল ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা জরুরি। ভোটার হওয়ার যোগ্য কোনো ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকা থেকে যাতে বাদ না পড়ে- তা নিশ্চিত করতে ইসি বদ্ধপরিকর। এ দিবস পালনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা সহজ হবে। কমিশন সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে পরদিন সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত ইসির কার্যপত্রে বলা হয়, প্রতি বছর ৭ জুলাই বা ১ জানুয়ারি ভোটার দিবস উদযাপনের তারিখ নির্ধারণ করা যেতে পারে। জাতীয় ভোটার দিবস ‘খ’ শ্রেণীভুক্ত দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মতি নিতে হবে। দিবস উদযাপনে অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মতির জন্যে পত্র পাঠাবে ইসি। এছাড়া তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করতে হবে। ভারতে ২৫ জানুয়ারি, পাকিস্তানে ৭ ডিসেম্বর, শ্রীলঙ্কায় ১ জুন, ভুটানে ১৫ সেপ্টেম্বর, নেপালে ১৯ ফেব্রুয়ারি ও আফগানিস্তানে ২৬ সেপ্টেম্বর ‘ন্যাশনাল ভোটারস ডে’ পালন করা হয় বলেও ইসির কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চ ‘ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান’ গঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘ইলেকশন কমিশন অব বাংলাদেশ’ নামে ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই পুনর্গঠিত হয় ইসি। কর্মকর্তারা বলছেন, অধিকাংশ দেশে নির্বাচন কমিশন গঠনের তারিখকেই ‘ন্যাশনাল ভোটারস ডে’ হিসেবে পালন করা হয়। আর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদিত বিদ্যমান জাতীয় দিবসের তালিকায় ১/১ বা ৭/৭ তারিখে কোনো দিবস পালনের সূচি নেই। নারী ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারাভিযান চালিয়ে আসা বেসরকারি সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) পরিচালক আব্দুল আলীম বলেন, “ভোটার দিবস পালনে ইসির উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক। অনেকে ভোটার হতে চান, কিন্তু ইসি ঘোষিত সময়ে তথ্য দিতে পারে না। তারা কনফিউজড থাকে কখন হালনাগাদ হবে। এখন একটি দিনকে বাছাই করা হলে ভোটারযোগ্যরা ভাববে ওই দিনটা আমার, ভোটার হতে তারাই সচেতন হবে।” যে কোনো দিবস ঘোষণায় সরকারের সায় নিতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগে। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর গুরুত্ব বিবেচনায় ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির যে কোনো একটি দিবস হিসেবে ভুক্ত করে পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। জাতীয়ভাবে এ দিবস কীভাবে উদযাপন করা হবে, সরকারের পক্ষ থেকে বাজেট কতটুকু বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা বিবেচনায় যে কোনো একটি শ্রেণিতে রাখা হয় ওই দিবসকে। সর্বশেষ ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১২ ডিসেম্বরকে ‘ন্যাশনাল আইসিটি ডে’ বা ‘জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। ওই দিনটি ‘খ’ ক্যাটাগরির দিবস হিসেবে পালন করা হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান।


এই বিভাগের আরও