নরসিংদীতে এই বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

০৭ মার্চ ২০১৮, ০৩:২৪ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৪ এএম


নরসিংদীতে এই বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
নিজেস্ব প্রতিবেদক [caption id="attachment_1898" align="alignnone" width="780"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] নরসিংদী অঞ্চলের আম গাছ মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে। আম বাগানগুলো মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। আম চাষী, বাগান মালিক, কৃষিবিদ ও ফল গবেষকগণ আশা করছেন, এবার আমের অন ইয়ার , আবহাওয়াও ভালো আছে, ফলন ভালো হবে। এই অঞ্চলে বড় ধরনের কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা। আম গাছে ইতোমধ্যেই ৯০ শতাংশ মুকুল এসেছে। ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার ড. আলিমুদ্দীন বলেন, চলমান জলবায়ু পরিস্থিতি আমের মুকুল ফুটে ওঠার জন্য যথোপযোগী। ইতোমধ্যে অসংখ্য গাছের মুকুলিত রূপ নজর কাড়ছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি গাছগুলো মুকুলিত হওয়া শুরু করেছে ও চলতি মাসের মাঝামাঝি চাষের জন্য যথোপযোগী আবহাওয়ার সুবাদে শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ গাছ মুকুলিত হয়ে উঠেছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) উপপরিচালক দেবদুলাল ঢালী বলেন, কৃষকের যথাযথ পরিচর্যা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রতিটি এলাকায় চাষে সাফল্য এনে দেবে। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। নরসিংদীর সব এলাকাতেই রয়েছে আমবাগান। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আম বাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত ও আশ্বিনা জাতেরই গাছ বেশি হচ্ছে। নরসিংদী শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলায় বাগানের সংখ্যা বেশি। স্থানীয় আমচাষি খোরশেদ আলম জানান, এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। গত বছরের চেয়ে টানা শীত ও কুয়াশার তীব্রতা এ বছর অনেক কম। গতবারের মতো মৌসুমের শুরুতে শিলাবৃষ্টিও হয়নি। এরই মধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, ফাল্গুনের মধ্যে নরসিংদী এর পার্শ্ববর্তী জেলার আম গাছগুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল আসবে। তবে মাঝে-মধ্যেই আকাশে মেঘ জমে উঠছে। এ সময় শিলাবৃষ্টি হলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। এর উপর সামনে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কাও কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনূকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি। বছর জুড়ে গাছের পরিচর্যা করার কারণে এখন প্রতি বছরই আমের ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই তারা পুরো গাছ সাইপারম্যাক্সিন ও কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছেন। এতে গাছে বাস করা হপার বা শোষকজাতীয় পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যদি সঠিক সময়ে হপার বা শোষক পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যেত বলে জানান এই আমচাষি। নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, ধান-চাল বা অন্য ফসলের মতো আম উৎপাদনের কোনো লক্ষ্যমাত্রা কৃষি অধিদফতরের কাছে থাকে না। তবে নরসিংদীর ৯ হাজার ১০৯ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে। আগামী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ অঞ্চল থেকে প্রায় দুই লাখ টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা করা যাচ্ছে।