বাড়ছে ধনী-গরিবের বৈষম্য

২০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৬ এএম | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০০ এএম


বাড়ছে ধনী-গরিবের বৈষম্য
অনলাইন ডেস্ক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুণগত মান না বাড়ায় দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। যার কারণ হিসেবে ব্যাংকিং খাতের উদাহরণ তুলে ধরে সংস্থাটি বলছে, একটি শ্রেণি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ খেলাপি হচ্ছে। আর এর পেছনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুর্বল নেতৃত্বকে দায়ী করছে সিপিডি। আজ শনিবার সিপিডি মিলনায়তনে আয়োজিত চলতি বছরের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত এক দশকে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হচ্ছে প্রায় ছয় শতাংশ হারে। কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছে উচ্চ প্রবৃদ্ধির এই অর্থনীতি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সক্ষমতা হারাচ্ছে। সিপিডির গবেষণা অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রবৃদ্ধি হতো ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ বিগত পাঁচ বছরে সাড়ে ছয় শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি দিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ছে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রেও এই প্রবৃদ্ধি সহায়ক নয়। গত এক দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দারিদ্র্য বিমোচন কমেছে। সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকার গত দশক ধরে প্রায় একটি শোভন প্রবৃদ্ধির হারকে রক্ষা করতে পেরেছে। কিন্তু এই শোভন প্রবৃদ্ধির হারের নিচে যে অন্ধকারটা রয়েছে, যে অন্ধকারটি রয়েছে সেটি হলো দেশের ভেতরে সেই তুলনায় কর্মসংস্থান হচ্ছে না, সেই তুলনায় দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে না, দারিদ্র্য বিমোচনের হার শ্লথ হয়ে এসেছে এবং তৃতীয়ত সবচেয়ে বড় যেটা সেখানে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।’ অর্থনীতির এমন চরিত্রের কারণে ধনী-গরীবের বৈষম্য বাড়ছে বলে মনে করে সিপিডি। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৬ সালে সমাজের সবচেয়ে নিচের দিকের পাঁচ শতাংশের আয় মোট আয়ের দশমিক ২৩ শতাংশ। যেখানে ২০১০ সালে ছিল দশমিক ৭৮ শতাংশ। অপরদিকে উচ্চআয়ের মানুষের আয় আরো বেড়েছে। আর এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে ব্যাংকিং খাতকে তুলে ধরে সিপিডি। ঋণের টাকা রাজনৈতিক সুবিধাভোগী একশ্রেণির মানুষের কাছে যাচ্ছে। যার অধিকাংশই খেলাপি হচ্ছে বলে মনে করে সিপিডি। ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘২০১৭ সাল ব্যাংক কেলেংকারির বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এবং এটার যে কোনো নিরসন ২০১৮ তে হবে এইটাও আমরা এই মুহূর্তে দেখতে পাচ্ছি না। ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি দিয়ে বোঝা যায় যে সরকারের এই সংস্কারের ব্যাপারে দৃষ্টি কী রকম ছিল। সেজন্য আগামী ২০১৮ সালে অর্থ ব্যস্থাপনার ক্ষেত্রে নির্বাচনকে সামনে রেখে বহির্মুখী চাপের মুখে এটাকে একটি রক্ষণশীল ব্যবস্থাপনার ভেতরে থাকার ব্যাপারে আমাদের পরামর্শ রয়েছে।’ দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আগের চেয়ে অনেক দুর্বল হয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি বলছে, এজন্য দায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুর্বল নেতৃত্ব। সিপিডির মতে, মূল্যস্ফীতিও ভুগিয়েছে ২০১৭ সালকে। সেই সঙ্গে অর্থপাচার রোধে আরো কঠোর হওয়ারও পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।