মাধবদীর নওপাড়ার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:০৯ পিএম | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৩ এএম


মাধবদীর নওপাড়ার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

মোঃ মুছা মিয়া ॥
নরসিংদী সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের প্রায় সবগুলো রাস্তা খানাখন্দ ও জলাবদ্ধতার চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে।
শিল্পোন্নত এ গ্রামটিতে ৭টি মসজিদ, ১টি এবতেদায়ী, ৩টি হেফজখানা, ২টি কলেজ, দুটি হাই স্কুল, ১টি গার্লস স্কুল, ৩টি কেজি স্কুল, ১টি প্রাইমারি স্কুল, মসজিদ ভিত্তিক মক্তব ও ১টি মন্দিরসহ বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভূঞা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছে একটি রিসোর্ট। জজ ভূঞা গ্রুপের প্রাণ কেন্দ্রই হল নওপাড়ায়। এই গ্রুপের টেক্সটাইল, সুইটার, স্পিনিংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই গ্রামে। হক ট্রেডার্সের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ এলাকায় আরো ছোট বড় বেশকিছু সংখ্যক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানা থাকার সুবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এখানে কর্মরত। ফলে এলাকায় গড়ে উঠেছে ভাড়া বাড়ি, খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গুরুত্বপূর্ণ ও উন্নয়নশীল এই গ্রামের রাস্তাঘাট উন্নত না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নওপাড়া তারাপুকুর পাড় থেকে নওপাড়া মুরগির ফার্ম পর্যন্ত রাস্তাটিতে ১৯৯৯ সালে ইট বিছানো হয়েছিল। এরপর রাস্তাটিতে আর কোন সংস্কার কাজ না করায় সম্পূর্ণ রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে। বিছানো ইটের সন্ধান নেই অনেক স্থানে, যেখানে আছে তাও উঁচু-নিচু হয়ে গর্তে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি ও কাঁদা।
অতি সম্প্রতি তারা পুকুর পাড় থেকে প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তায় পাইপের মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ড্রেনের ম্যানহোলের ঢাকনাগুলো রড না দিয়ে তৈরি করায় অল্প কয়দিনেই তা ভেঙ্গে যায়। এতে সৃষ্টি হয় মরণ ফাঁদ। এমন অবস্থায় রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।


অপরদিকে নওপাড়ার প্রধান রাস্তা নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও মাধবদী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভূঞা বাড়ি হয়ে নওপাড়া বায়তুর রহমান জামে (কুয়েতি) মসজিদ পর্যন্ত আবার টাটাপাড়া প্রাইমারি স্কুল থেকে নওপাড়া বায়তুর রহমান জামে (কুয়েতি) মসজিদ পর্যন্ত রাস্তাগুলো প্রায় ১৫ বছর পূর্বে পাকাকরণ হয়েছিল। পাকা করার পর থেকে আজো পর্যন্ত রাস্তাটিতে কোন সংস্কার করা হয়নি। দীর্ঘ সময় যাবত রাস্তাটি সংস্কার না করায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে থাকে সড়ক, জমে থাকে কাঁদা। এতে রিক্সা, গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তাগুলো খালে পরিণত হয়। প্রতিটি বাড়ির ব্যবহার্য পানি ও ময়লা পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে রাস্তায়। গ্রামের শাখা রাস্তাগুলোর বেশিরভাগের একই হাল।


গ্রামের পানি ফসলি জমি দিয়ে খালে নিষ্কাশন হতো। অপরিকল্পিতভাবে এসব ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও রিসোর্ট। ঘনবসতি এই গ্রামটিতে হঠাৎ করে শিল্পোন্নয়রের উন্নয়নের ছোয়ার ফলে গ্রামে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতায় ডুবে আছে অনেক বাড়ি ঘর, রাস্তা ঘাট।
নওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আসাদ মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামটিতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানা থাকায় রাস্তাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাস্তাগুলোর এমন নাজুক পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ জানান তিনি।
একই গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মতিন মিয়া জানান, খেলাধূলার জন্য নির্ধারিত স্থান বা মাঠ না থাকা এবং জলাবদ্ধতার কারণে শিশুরা রাস্তায় খেলাধুলা ও চলাফেরা করতো। কিন্তু রাস্তায় সর্বদা কাঁদা ও জলাবদ্ধতার জন্য শিশুরা ঘরে বন্ধী অবস্থায় থাকছে।
যোগাযোগ করা হলে নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ খাদেমুল ইসলাম ফয়সাল স্থানীয় বাসিন্দাদের এসব ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সড়কগুলো সংস্কারের জন্য বরাদ্ধ পাওয়ার চেষ্টা করছি। বরাদ্ধ পেলেই রাস্তাগুলোর সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।



এই বিভাগের আরও