নরসিংদীতে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের দোকান দখলের অভিযোগ

০৬ মার্চ ২০২৩, ০৩:১৬ পিএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম


নরসিংদীতে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের দোকান দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী শহরের সিএন্ডবি রোড এলাকায় সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ছোট ভাইয়ের দোকান দখল ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীদের দাবি, আদালতের রায়কে অমান্য করে শহরের নয়নতারা প্লাজার নীচতলার দুটি দোকান দখলের করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, যৌন হয়রানি ও লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বড় ভাই শ্যামল কুমার সাহা বাদী হয়ে ছোট দুই ভাই বিমল কুমার সাহা ও কমল কুমার সাহার বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা দায়ের করেন। ছোট ভাইয়েরাও হত্যার হুমকির অভিযোগে বড় ভাই শ্যামল কুমার সাহার বিরুদ্ধে থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি সহ ২টি মামলা করেন।

এ নিয়ে নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুজ্জান কামরুল ও বর্তমান মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রিপন সরকার, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ স্থানীয় কাউন্সিলররাও এ নিয়ে একাধিক সালিশ করেন। তবু তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন হয়নি। তারা একাধিকবার সংঘর্ষে জড়ায় এবং পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি হয়।

২০১১ সালের ৪ মার্চ বড় ভাই শ্যামল কুমার সাহা বাদী হয়ে পিতা তারকনাথ সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সিনিয়র আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় তাদের পাঁচতলা বিশিষ্ট নয়নতারা প্লাজাটি ৩ টি তফসিলে বিভক্ত করা হয়। ক নং তফসিলে শ্যামল ফ্যাশন, ঘোমটা ফ্যাশন হাউজ এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি খ ও গ নং তফসিলে বিভক্ত করা হয়।

পরে কমল কুমার সাহা ও বিমল কুমার সাহা হাইকোর্টে সম্পত্তি নিয়ে রিট করলে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট স্ট্যাটাস কো আদেশ প্রদান করেন এবং বলা হয়, চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের দখল বজায় থাকবে এবং খ ও গ নং তফসিল বর্ণিত বিষয়ে মালিকানা ভাগ করে দিলেও ক নং তফসিল নিয়ে কিছু বলা হয়নি। মামলাটি হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।

ভুক্তভোগী দুই ভাইয়ের অভিযোগ, কোর্টের এসব স্ট্যাটাস-কো কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বড় ভাই শ্যামল ক তফসিল বর্ণিত কমল কুমার সাহার মালিকানাধীন ২ টি দোকান দখল করে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং ভাড়াটিয়াদেরকে মারধর করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্যামল কুমার সাহা তার ছোট দুই ভাই কমল কুমার সাহা ও বিমল কুমার সাহাকে প্রভাবশালীদের দিয়ে মারধরের অভিযোগও করেন।

বিমল কুমার সাহা বলেন, " ছোট ভাই কমল জাপানে থাকা অবস্থায় বাবার নামে জমি কিনে ৫ তলা ভবনটি নির্মাণ করা হয় এবং বাবা প্রত্যেককে দান (হেবা) দলিল করে ভাগবাটোয়ারা করে বুঝিয়ে দেন। প্রথম দলিলে কে কোন অংশ পাবেন, এ কথা উল্লেখ না থাকায় জটিলতায় তৈরি হলে ২০১১ সালে সবাইকে ভাগ বাটোয়ারা করে দেন। কিন্তু বড় ভাই শ্যামল কুমার সাহা এসব না মেনে এই বছর বাবা সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সিনিয়র জজ আদালতে মামলা করেন। এখন মামলাটি হাইকোর্টে চলমান।" শ্যামল কুমার সাহা সম্পত্তির লোভে তার স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণের মামলাও করেছেন।

কমল কুমার সাহা বলেন, শ্যামল কুমার সাহা বানোয়াট ও আজগুবি কাগজপত্র দেখিয়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করছে এবং আমার ভাড়াটিয়াদের সাথে খারাপ আচরণ করছে। এতে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে শ্যামল কুমার সাহাকে একাধিকার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এসএমএস করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূইয়া বলেন, সম্পত্তি নিয়ে পূর্বে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কী না জানি না। তবে গত এক সপ্তাহের মধ্যে শ্যামল কুমার সাহা কিংবা তার ভাইদের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



এই বিভাগের আরও