নরসিংদীতে বাসায় ঢুকে শিক্ষকের স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা

২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ১০:৪২ পিএম


নরসিংদীতে বাসায় ঢুকে শিক্ষকের স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী শহরে বাসায় ঢুকে এক শিক্ষকের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পৌর শহরের সাটিরপাড়া সরকারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনের একটি ভাড়া বাসায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।

কে বা কারা ওই গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার পর বাসাটির দরজা খোলা রেখে পালিয়ে যায়।

নিহত গৃহবধূর নাম মানসুরা আক্তার ইতি (২৪)। তিনি শহরের সাটিরপাড়া কে কে ইন্সটিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের পৌরনীতি বিষয়ের প্রভাষক মশিউর রহমান হিমেলের স্ত্রী। এই দম্পতির হিয়ামনি নামে চার বছরের একটি শিশুকন্যা রয়েছে ।

নিহত গৃহবধূর স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, এই দম্পতি তাদের শিশু সন্তানকে নিয়ে ৪ তলা বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে গত একবছর ধরে ভাড়ায় বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্ত্রী মানসুরাকে বাসায় রেখে স্বামী মশিউর রহমান তাঁর গ্রামের বাড়ি বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ এলাকায় যান। দুপুরের পর থেকে স্ত্রীকে ফোনে না পেয়ে শশুর বাড়িতে ফোন করে জানান।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ওই বাসায় মানসুরার গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তার স্বজন ও স্থানীয় লোকজন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খবর পেয়ে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। পরে ওই গৃহবধূর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

 বিকেল সাড়ে ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খবর পেয়ে নিহতের বাবা, মা ও ভাই পাঁচদোনা থেকে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। নিহত মানসুরার স্বামী মশিউর রহমানও খবর পেয়ে ওই বাসায় ফিরেছেন। তারা পরষ্পরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছেন। অন্যদিকে পুলিশ সদস্যরা নিহতের স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নানা তথ্য নিচ্ছেন। কিন্তু কেন ও কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো তা নিশ্চিত হতে পারেননি পুলিশ সদস্যরা।

নিহত গৃহবধূর বড়ভাই নূর মোহাম্মদ জানান, ৬ বছর আগে ছোটবোন মানসুরার সঙ্গে মশিউরের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গত একবছর ধরে এই বাসায় উঠার পর থেকেই প্রতি শুক্রবার মশিউর মানসুরাকে বাসাটিতে রেখে গ্রামের বাড়িতে যেতেন। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তাঁর গলাকাটা লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকার খবর পাই। এরপরই বাড়ি থেকে মা-বাবাকে নিয়ে এখানে এসেছি। কে বা কারা তাকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করলো, বুঝতে পারছি না। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে সন্দেহ করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও জানান, কাকে যে সন্দেহ করবো, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে যে বা যারা আমার বোনকে দিনেদুপুরে এমনভাবে হত্যা করেছে, আমি তাঁর বিচার চাই।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান জানান, কে বা কারা ওই গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করেছে তা আমরা তদন্ত করে বের করবো। সম্ভাব্য সব বিষয় সামনে রেখেই পুলিশি তদন্ত করা হবে। আশা করছি, দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পারবো আমরা।

 



এই বিভাগের আরও