সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে ছিল পিঠা, মুখে ছিল হাসি

৩১ জানুয়ারি ২০২১, ০১:৪৩ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩২ এএম


সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে ছিল পিঠা, মুখে ছিল হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে বেদে সম্প্রদায়ের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পিঠা উৎসব হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার হাজীপুরের হাড়িধোয়া নদীর পাড়ে এই পিঠা উৎসব হয়। প্রথম আলো বন্ধুসভার নিজস্ব অর্থায়নে আয়োজিত এই পিঠা উৎসবে আনন্দে মুখর হয়ে উঠেছিল হাজীপুরের বেদে পল্লীর শিশুরা। 

বন্ধুসভার কয়েকজন বন্ধু আগে থেকেই ওই বেদে পল্লীতে গিয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের একত্র করে সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড় করান। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থেকে শিশুদের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়। ১০০টি শিশুর জন্য পিঠার আয়োজন করা হলেও শেষ পর্যন্ত ১২০টি শিশুকে পিঠা খাওয়াতে পেরেছেন বন্ধুরা।

অনুষ্ঠানে অতিথি থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে পিঠা খাওয়ার আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন নরসিংদী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহ আলম মিয়া, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. শাহরুখ খান এবং প্রথম আলোর নরসিংদী প্রতিনিধি প্রণব কুমার দেবনাথ। এই পিঠা উৎসবের আনন্দ আয়োজনে সামিল হন সিলেট বন্ধুসভার কার্যনির্বাহী সদস্য কালিম আহমেদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে নিজস্ব উদ্যোগে বাড়ি থেকে ৮ ধরণের পিঠা তৈরি করে এনেছিলেন বন্ধুসভার নয়জন বন্ধু। এর মধ্যে ছিল পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, মুগের পুলি, চিতই পিঠা, খেঁজুর পাতার পিঠা, ভর্তা পিঠা, মেরা পিঠা ও মালপোয়া। পিঠা উৎসব আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন সংগঠনটির সভাপতি পল্টন চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক হৃদয় গোপাল সাহা।

এ সময় ওয়ান টাইম প্লেটে আট ধরণের পিঠা একে একে সাজিয়ে দেন সহসভাপতি লাবন্য আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা হোসাইন নীলা, অনুষ্ঠান সম্পাদক অপর্ণা সাহা শর্মী, অর্থ সম্পাদক চিত্রা পোদ্দার, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আন নূর ও নারী বিষয়ক সম্পাদক সায়মা আক্তার বিথী। পরে তা শিশুদের হাতে সুশৃঙ্খলভাবে একে একে তুলে দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক সীমান্ত সাহা, পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক দুর্জয় সিংহ, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,  ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দীপ্ত সাহা ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক রাজু আফনান।

এত ধরণের পিঠার আয়োজন দেখে সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের মুখে ছিল হাসি। পিঠা হাতে তুলে দেওয়ার সময় হলে আনন্দে হাততালি দিতে থাকে শিশুরা। শিশুরা তাদের পছন্দমতো পিঠা খায়। তবে সব পিঠা তারা খেয়ে শেষ করতে পারেনি। অনেক শিশুকে দেখা গেছে পিঠা নিয়ে তাদের মায়ের সঙ্গে বাড়ি চলে যেতে। আকলিমা নামের এক শিশুর শুধুই পাটিসাপটা পিঠা পছন্দ। দুইটা পিঠা খাওয়ার পরই আর খেতে পারছিল না সে। বাকী পিঠাগুলো সে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়। সজল নামের এক শিশুকে দেখা গেছে, সব পিঠা খেয়ে শেষ করতে না পারলেও বাকী পিঠাগুলো তার অভিভাবকের হাতে দিচ্ছে না। এ নিয়ে উপস্থিত অতিথি, বন্ধুসভার বন্ধু ও চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা শতাধিক দর্শকদের মধ্যে এক আনন্দঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।

সংগঠনটির সহসভাপতি লাবন্য আহমেদ তেলের পিঠা, অনুষ্ঠান সম্পাদক অপর্ণা সাহা শর্মী খেঁজুর পাতার পিঠা, নারী বিষয়ক সম্পাদক সায়মা আক্তার বিথী মেরা পিঠা, পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক দুর্জয় সিংহ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক রাজু আফনান মিলে মুগের পুলি পিঠা, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দীপ্ত সাহা চিতই পিঠা, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভর্তা পিঠা, সাংগঠনিক সম্পাদক সীমান্ত সাহা মালপোয়া পিঠা এবং অর্থ সম্পাদক চিত্রা পোদ্দার পাটিসাপটা পিঠা নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হয়েছিলেন।



এই বিভাগের আরও