নরসিংদীতে রেলওয়ের জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল শুরু

১৩ নভেম্বর ২০২০, ০৪:০৩ পিএম | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:১৫ এএম


নরসিংদীতে রেলওয়ের জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীতে রেলওয়ের জমি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল শুরু হয়েছে। উচ্ছেদকৃত জমিতে আবারও পাকা দোকানপাট নির্মাণ শুরু করেছে অবৈধ দখলদাররা।
গত ২০ অক্টোবর নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় রেলের জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তোলা ১২ শত স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।


রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, নরসিংদী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে দখল করে বাসা-বাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে সাবেক মদনগঞ্জ রেলসড়কের বাসাইল শাপলা চত্বর পর্যন্ত দুই হাজার ছোট বড় অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রেলওয়ের জমি দখলমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এসময় রেলওয়ের বিভাগীয় ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে শহরের শাপলা চত্বর পর্যন্ত ১২০০ অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।


এই অভিযানের ২০ দিন পার না হতেই নরসিংদী পৌরসভার শাপলা চত্বর এলাকায় উচ্ছেদকৃত জমিতে ফের অবৈধ দোকান-পাট নির্মাণ শুরু হয়েছে। মাইন উদ্দিন প্রধান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি ২০০৯ সাল থেকে শাপলা চত্বর এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে কয়েকশত দোকানপাট তৈরি করে বাজার গড়ে তোলেন। ছোট বড় এসব দোকানের প্রতিটি থেকে জামানত হিসেবে ৪/৫ লাখ টাকা নেয়াসহ প্রতি মাসে ভাড়া আদায় করা হতো।


এভাবেই রেলের জমি দখল করে মাইন উদ্দিন প্রধান বছরের পর বছর হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কেটি টাকা। তিনি শাপলা চত্বরে নির্মাণ করেছেন ৬ তলা ও ৪ তলা ভবন। তার ভয়ে অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ এলাকাবাসীও। গত ২০ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে মাইন উদ্দিন প্রধানের গড়ে তোলা দোকানপাটসহ ১২ শত অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরে রেলের এসব জমি দখল করে ফের দোকানপাট নির্মাণ শুরু করেছেন মাইন উদ্দিন প্রধান।


এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাইনউদ্দীন প্রধান বলেন, আমি ১৯৯২ সাল থেকে রেলের জমি লীজ নিয়ে এখানে দোকান-পাট নির্মাণ করি। পরে হঠাৎ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দোকানপাট ভেঙ্গে উচ্ছেদ করার পর আবারো কমলাপুর রেলওয়ে থেকে লীজ নবায়ন করে নতুন করে দোকান পাট নির্মাণ করছি।


এ বিষয়ে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ফারহানা কাউনাইন বলেন, রেলওয়ের সম্পত্তি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ বা তত্বাবধান করে। এখানে জেলা প্রশাসনের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। জেলা প্রশাসন অভিযানের সময় শুধু ম্যাজিষ্ট্রেট দিয়ে সহযোগিতা করে। এ বিষয়ে আমি রেলওয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবো, যেন রেলের সম্পত্তি পুনরায় সংরক্ষণ করা হয়।


বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (পূর্ব) কংকন চাকমা বলেন, উচ্ছেদ অভিযান রেলওয়ের চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদ করে চলে আসার পর যদি অবৈধ দখলদাররা আবারও নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করে, তাহলে আবারো অভিযান পরিচালনা করে ভেঙ্গে দেয়া হবে। আমি বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (ঢাকা) কে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলবো।



এই বিভাগের আরও