বেলাবতে অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে অনিয়ম

০৭ জানুয়ারি ২০২০, ০৪:১৮ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ এএম


বেলাবতে অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে অনিয়ম

বেলাব প্রতিনিধি:
নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি) প্রকল্পে কাজে ফাঁকি দেয়াসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের সাথে প্রকল্প সভাপতি, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, সচিব ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। বেলাব উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই এ অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে।

নারায়ণপুর, চরউজিলাব ও পাটুলী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে দৈনিক শ্রমিক হিসাবে হতদরিদ্রদের স্থলে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে শ্রমিকের তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রভাবশালী আত্মীয় স্বজন ও মধ্যবিত্তদের নাম। অনেক ক্ষেত্রে উক্ত কর্মসূচীতে যেসব শ্রমিকদের নাম রয়েছে সেসব শ্রমিকদের কাজ না দিয়ে প্রক্সি শ্রমিক হিসাবে চেয়ারম্যান মেম্বার ও সচিবদের পছন্দের লোকদের নাম অর্ন্তভুক্তি করে নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে বাকী টাকা স্থানীয় প্রকল্প সভাপতিসহ অন্যান্যরা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বেলাব উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচী প্রকল্পে কাগজে কলমে এগারশ চার জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে এর পরিমাণ অর্ধেকের চেয়েও কম। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটা দলে ২০/২৫ জন শ্রমিক থাকার কথা কথা থাকলেও কোন ইউনিয়নের কোন দলেই ৫ থেকে ১০ জন শ্রমিকের বেশি পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, সচিব, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে এ অনিয়ম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ইউনিয়ন পরিষদ সচিবরা শ্রমিকদের সাক্ষর নিয়ে তাদের পক্ষে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ভাগ বন্টন করে দেন।

চরউজিলাব ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, ২৫ জন শ্রমিকের স্থলে কাজ করছেন ১৩ জন। উক্ত ওয়ার্ডের প্রকল্প সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ আসাদ মিয়া। জানা গেছে প্রকল্প সভাপতির ভাই ও নিকট আত্মীয়দের নাম রয়েছে উক্ত তালিকায়। যারা কোনদিনই কাজে আসেন না অথচ তারা নিয়মিত মজুরী নিয়ে থাকেন।

এ ব্যাপারে চরউজিলাব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রফেসর আক্তারুজ্জামান বলেন, উক্ত ওয়ার্ডে আমার জানামতে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। কিন্তু শ্রমিকের সংখ্যা কম কেন তা আমি খতিয়ে দেখবো।

এদিকে পাটুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আক্তারুজ্জামানের মধুয়ারটেক ওয়ার্ড এলাকায় কোন শ্রমিকই মাঠে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে বলেন সব জানেন চেয়ারম্যান।

নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসলেহ উদ্দীন খাঁন সেন্টু বলেন, অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিক অসুস্থ হলে তার বিকল্প হিসাবে তারই আত্মীয় স্বজন প্রক্সি শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। তবে এ সংখ্যা খুবই কম। এতে আমাদের কোন হাত নেই।

পাটুলী ইউনিয়নের সচিব মোঃ আলতাফ হোসেন খালেদ শ্রমিকদের পক্ষে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার ইউনিয়নে ১৬৭ জন শ্রমিক কাজ করেন। এ ইউনিয়নে শ্রমিকরা তাদের মজুরীর টাকা নিজেরাই ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নায়েমা তাবাছসুম শাহ এসব অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উক্ত প্রকল্পে কোন অনিয়ম বা সমস্যা নেই। যদি কোথাও এরকম অনিয়ম হয় তাহলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



এই বিভাগের আরও