বেলাবতে প্রধান শিক্ষক সাময়িক বহিষ্কার, সভাপতির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৩২ এএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১২ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীর বেলাবতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের জেরে সভাপতি কর্তৃক প্রধান শিক্ষক সাময়িক বহিষ্কার ও প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডে পাল্টা অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। পাল্টাপাল্টি একাধিক অভিযোগ, বহিষ্কার ও দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দক্ষিণধুরু উচ্চ বিদ্যালয়ে। বেলাব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাজমুল হাসান ভূইয়া এসব অভিযোগের তদন্ত করছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়া ও প্রধান শিক্ষক আবু তাহের এর মধ্যে বিদ্যালয়ের নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয় ৪ জন। ৪ জনকে নিয়োগ দিতে প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বারবার সভাপতিকে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করতে অনুরোধ করলেও সভাপতি অনিয়ম হয়েছে এমন ইঙ্গিত পেয়ে স্বাক্ষর দেয়া থেকে বিরত থাকেন। নিয়োগ পরীক্ষার ১২ দিন পর পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অকৃতকার্য হওয়া বাকি ১২ জন পরীক্ষায় অনিয়ম হয়েছে অভিযোগ করে পূণরায় নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সভাপতির কাছে লিখিত আবেদন করেন। পরে পরিচালনা কমিটি সভা করে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করেন। অভিযোগ রয়েছে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক আলাদা আলাদা ভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে না পারায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
জানা গেছে, নতুন কমিটি গঠনের পর চলতি বছরের ১৪ মে প্রথম সভা আহবান করেন কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক আবু তাহের। কিন্তু তিনি সভা আহবার করে নিজেই উপস্থিত থাকেননি। এমনকি রেজুলেশন খাতা তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় সভায় আসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সিদ্বান্তে নতুন খাতা ক্রয় করে সভার রেজুলেশন করেন সভাপতি। পরে তিন মাসের মধ্যে একাধিকবার সভা আহবান করা হলেও প্রধান শিক্ষক নানা অজুহাতে উক্ত সভায় অনুপস্থিত থাকেন এবং কমিটিকে অসহযোগিতা করেন।
অসহযোগিতার পরিমাণ বাড়তে থাকলে গত ২১ জুন বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কমিটির সভাপতি আবুল কালাম। অভিযোগের পরও উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় কমিটি ২৮ জুলাই শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের সাথে অসৌজণ্যমূলক আচরণ, না এসেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর, সভায় উপস্থিত না হওয়া, বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ, মোবাইল সেট ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, বিদ্যালয়ের রেজুলেশন ও নোটিশ খাতা বাসায় নিয়ে যাওয়া, ফান্ডের টাকা ফেরত না দেয়া, নবনির্মিত ভবন হতে বে-আইনী কমিশন নেয়া, শিক্ষকদের হুমকী দেয়া, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বোনাস না দেয়ার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে কমিটি। পরপর তিনটি নোটিশের জবাব না দেয়াসহ নানা অনিয়মের কারণে তাকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না কারণ জানতে চাওয়া হয়। এসবের কোন জবাব না দিয়ে শিক্ষক ও কমিটির লোকদের সাথে উক্ত শিক্ষকের খারাপ আচরণ অব্যাহত থাকে। ফলে চলতি মাসের ১২ তারিখে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে কমিটি। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষক কর্মচারী অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারী ও অশিক্ষক সুলভ আচরণের অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অনাস্থা দেন।
এদিকে ২৩ আগস্ট প্রধান শিক্ষক সভাপতির বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আবুল কালাম ভূইয়া সভাপতি হবার পর নোটিশ ও রেজুলেশন খাতা কিনে বাসায় বসে কমিটির কিছু সংখ্যক লোকের স্বাক্ষরে রেজুলেশন খাতা লেখা, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ঠিকাদারের কাছ থেকে উন্নয়নের জন্য পাওয়া ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা মাটি ভরাট করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করা, আজীবন দাতা সদস্য হিসাবে এককালীন ১৫ হাজার টাকা জমা না দেয়া, কিছু শিক্ষক নিয়ে গ্রুপিং করা ও বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করা। এসব অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক কোন মিটিংয়ে আসেন না। নোটিশ খাতা রেজুলেশন খাতা বাড়িতে নিয়ে যায়। কমিটির সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করেন না। শিক্ষকরা অনাস্থা দিয়েছেন। কমিটিও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। আমাকে হেয় করার জন্য উনি নিজে উল্টো বোর্ডে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বলেন, সভাপতির বিরুদ্ধে আমি বোর্ডে অভিযোগ দিয়েছি, যার তদন্ত চলমান। এ অভিযোগের তদন্তকালীন আমাকে সাময়িক বরখাস্ত বা অন্য কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
বেলাব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ভূইয়া জানান, প্রধান শিক্ষক সভাপতির বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মতিউর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সভাপতির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশের তথ্য জানা থাকলেও সাময়িক বরখাস্তের ব্যাপারে আমি অবগত নই।
বিভাগ : নরসিংদীর খবর
- বেলাব উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত
- শিবপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণ উদ্বোধন
- নরসিংদীতে অর্থনৈতিক শুমারি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন
- নরসিংদীতে ইসকন নিষিদ্ধ ও আস্তানা বন্ধ করতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
- নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১
- আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা
- নরসিংদী উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাংচুর, ক্ষতিপূরণ আদায় করে মীমাংসা করলেন ইউএনও
- মৎস্য আহরণ বন্ধে দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
- মৎস্য অধিদপ্তরের জন্য ৮২টি নতুন পদ সৃজন
- বেলাব উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত
- শিবপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণ উদ্বোধন
- নরসিংদীতে অর্থনৈতিক শুমারি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন
- নরসিংদীতে ইসকন নিষিদ্ধ ও আস্তানা বন্ধ করতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
- নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১
- আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা
- নরসিংদী উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাংচুর, ক্ষতিপূরণ আদায় করে মীমাংসা করলেন ইউএনও
- মৎস্য আহরণ বন্ধে দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
- মৎস্য অধিদপ্তরের জন্য ৮২টি নতুন পদ সৃজন