বেলাবতে ঠিকাদারের ভুলের কারণে বন্ধ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ

১০ আগস্ট ২০২২, ০৫:০৫ পিএম | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম


বেলাবতে ঠিকাদারের ভুলের কারণে বন্ধ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ

বেলাব প্রতিনিধি:
নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ভুলের কারণে ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ। এতে শ্রেণিকক্ষের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার সররাবাদ ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বরাদ্ধে ভবনটি নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১২ লক্ষ ৮২ হাজার চারশ টাকা। যা ২০২০ সালের ২২ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। সে অনুযায়ী ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও ভবনটির নির্মাণ কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি।

সরেজমিনে সররাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য সম্বলিত সাইন বোর্ড টানানোর নিয়ম থাকলেও কোন সাইন বোর্ড নেই।

এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুরুতেই ভবন নির্মাণ কাজ নকশা অনুযায়ী শুরু করা হলেও একপর্যায়ে ঠিকাদার ভবনের এক পাশের প্রস্থের চেয়ে অন্য পাশের প্রস্থের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন ফিট এদিক সেদিক করে পাইলিং এর বেইজ ডালায় করে ফেলে। যা বিল্ডিং এর মূল নকশার সাথে কোন মিল নেই।
এই ভুলের পর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস কাজ বন্ধ করার কথা বললে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কথা না শুনে যেদিক দিয়ে বিল্ডিং এর মাপ বেশি হয়েছে, সেদিকে গোপনে ভেকু মেশিন দিয়ে বেইজ টেনে সমান করে উভয় পাশের প্রস্থের সমান করে মাটি ভরাট করে ফেলে।

উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আজাদুর রহমান আজাদ মেম্বার বলেন, ভবন নির্মাণ না হওয়ায় বিদ্যালয়ে পাঠদানে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন ভবন দ্রুত নির্মাণের দাবী জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম জানান, ঠিকাদারের ভুলে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে শ্রেণীকক্ষের অভাবে পাঠদান করতে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত নতুন ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষে করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন স্বপন বলেন, ভবনের মাপে ভুল থাকায় এলাকাবাসী নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়েছিল। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। উনারা বলছেন এখানে এসে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি সরিয়ে দেখবে বেইজের কোন ক্ষতি হয়েছে কী না, তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।

এ বিষয়ে জানতে মেসার্স নিটুল কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বিপ্লবকে ফোন দেয়া হলে রাগান্বিত হয়ে বলেন, তুমি ইঞ্জিনিয়ার অফিসে গেলা কেন? তুমি তো আমার সাথেই যোগাযোগ করতে পারতা। ভবনের কাজ বন্ধ কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কেন বন্ধ সেটা ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে জিজ্ঞাস কর। আমি তোমার কাছে কিছু বলবো না।

উপজেলা প্রকৌশলী সামসুল হক ভূঁইয়াকে মোবাইল ফোনে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলে সব বক্তব্য দেয়া সম্ভব নয়। আপনি অফিসে আসেন। কথামত অফিসের গেলে ভবনের যাবতীয় তথ্য চাইলে তিনি বলেন, তথ্য আইনে আবেদন করলেই তথ্য দেয়া হবে, নতুবা না। পরে তিনি ভবন নির্মাণের ভুলের কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দোষারূপ করে বলেন, আমি আগেও একাধিকবার ভবনটি দেখতে গিয়েছি। আবার ইউএনও স্যারকে নিয়ে যাবো। যদি টেকনিক্যাল কোন সমস্যা থাকে বা ঠিক করা যায় তাহলে ঠিক করবো। নতুবা ঠিকাদারকে অবশ্যই নতুন করে বিল্ডিংটি নির্মাণ করতে হবে।



এই বিভাগের আরও