বেলাবতে লেয়ার মুরগীর খামারের দুর্গন্ধে বাড়ি ছাড়া এক পরিবার

০৮ ডিসেম্বর ২০২০, ০৫:৩২ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৫ এএম


বেলাবতে লেয়ার মুরগীর খামারের  দুর্গন্ধে বাড়ি ছাড়া এক পরিবার

শেখ আ: জলিল:
নরসিংদীর বেলাবতে হারুন মিয়া নামে এক মুদী দোকানির বসত ঘরের সাথে লেয়ার মুরগী ফার্মের বর্জে গর্ত করার অভিযোগ উঠেছে কাউছার মিয়া নামে এক খামারীর বিরুদ্ধে। নিয়মনীতি না মেনে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই স্থাপন করা উক্ত খামারের বর্জ্যরে দুর্গন্ধে দীর্ঘ ১ বছর ধরে বাড়ি ছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারটি।

বর্জ্য ফেলার গর্ত সরানোর জন্য ভুক্তভোগী হারুন মিয়া বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের পাহাড় উজিলাব গ্রামে ওই খামারটির অবস্থান।

ভুক্তভোগী হারুন মিয়া ও এলাকাবাসী জানায়, পাহাড় উজিলাব গ্রামের আবু আহম্মদ আলীর ছেলে মোঃ কাউছার মিয়া কয়েক বছর আগে হারুন মিয়ার বসত ঘর হতে মাত্র ৩ ফুট দূরে ১ হাজার সেটের একটি লেয়ার মুরগীর খামার স্থাপন করেন। উক্ত খামারের মুরগীর বর্জ্য ফেলার গর্ত করেন তার বসত ঘর ও রান্নার চুলা হতে ১ ফুট দূরে। এ ঘটনায় হারুন মিয়া একাধিকবার বসতঘর ও চুলার নিকটবর্তী ফার্মটির বর্জ্য ফেলার গর্ত স্থাপন স্থাপন না করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কাউছার মিয়া হারুনের কথায় কোন কর্ণপাত করেননি। বর্জ্য ফেলার স্থান ওই গর্তের তীব্র দুর্গন্ধে হারুনের পরিবার ৪ সদস্যকে নিয়ে প্রায় ১ বছর ধরে বসবাস করছেন পাহাড় উজিলাব বাজারস্থ তার মুদি দোকানে। এ ব্যাপারে গত অক্টোবর মাসে ভুক্তভোগী হারুন মিয়া ও ২০ প্রতিবেশি প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

তীব্র দুর্গন্ধের কারণে নাকে মুখে রুমাল চেপে এ প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, হারুন মিয়ার ঘর তালাবদ্ধ, হারুনের রান্নার চুলা ও বসত ঘর হতে কয়েক ফুট দূরে কাউছার মিয়ার লেয়ার মুরগীর খামার ও বর্জ্য ফেলার গর্ত। বর্জ্যরে গর্তটি বস্তার চট ও টিনের বেড়া দেয়া। চারপাশে বিষাক্ত দুর্গন্ধময় এ অবস্থা চলছে কয়েক বছর ধরে।

ভুক্তভোগী হারুন মিয়া জানান, বর্জ্যরে দুর্গন্ধে আমি দীর্ঘ ১ বছর ধরে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে উজিলাব বাজারের দোকানে বসবাস করছি। দোকানেই হয় থাকা খাওয়া। বারবার বলার পরও বর্জ্য ফেলার গর্ত সরাচ্ছেন না কাউছার মিয়া। সে কারও কথা শুনছে না। বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে আমার পরিবারের সকল সদস্যদের ফার্মের দুর্গন্ধে শ্বাসকষ্ট ও চর্মজনিত বিভিন্ন অসুখ দেখা দিয়েছে।

অভিযুক্ত খামারী কাউছার মিয়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমি গর্তের চারপাশ বেড়া দিয়ে দিয়েছি, যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ শরিফ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর ও অনুমোদনহীন একটি লেয়ার খামার স্থাপন করেছেন কাউছার মিয়া। বসত ঘরের সাথে তৈরি করা হয়েছে বর্জ্য ফেলার গর্ত। আমি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা শরমিন বলেন, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা আমার কাছে একটি আবেদন করেছিলেন। আমি খামারী কাউছার মিয়ার সাথে কথা বলেছি। সে ফার্ম ও বর্জ্য ফেলার গর্ত সরানোর জন্য একটু সময় চেয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে যদি এগুলো সরানোর ব্যবস্থা না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।