কলেজ পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান ড.মশিউর রহমান মৃধা

০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০১:১৯ পিএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম


কলেজ পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান ড.মশিউর রহমান মৃধা

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ, নরসিংদী’র অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধা কলেজ পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, ঢাকা অঞ্চল, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ঢাকা বিভাগের কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচনে তথ্য-উপাত্ত, সৃজনশীলতা ও সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড মূল্যায়নের ভিত্তিতে আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধা’র নাম গত ৩১ মার্চ প্রকাশিত হয়। এ প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, ঢাকা অঞ্চল, ঢাকার পক্ষ থেকে ড. মশিউর রহমান মৃধাকে সনদপত্র প্রদান করা হয়।

ড. মশিউর রহমান মৃধা আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজটির সূচনালগ্ন থেকে তিনি পরিশ্রম, মেধা, মননশীলতা, বিচক্ষণতা ও স্বপ্রতিভ দূরদর্শিতা দিয়ে বাংলাদেশের সেরা কলেজের তালিকায় নাম লিখাতে সক্ষম হন। তাঁর স্বীয় কর্মদক্ষতার সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে নিজের নামটিও লিখাতে সক্ষম হয়েছেন। কলেজ পরিচালনার দক্ষতা, শৃঙ্খলা, গবেষণা, সাহিত্য-সংস্কৃতি সর্বোপরি কলেজটির শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার যোগ্যতা বিবেচনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, ঢাকা অঞ্চল, ঢাকা ড. মশিউর রহমান মৃধাকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান (কলেজ) হিসেবে নির্বাচিত করে। ড. মশিউর রহমান মৃধা কলেজটির সর্বোচ্চ ফলাফলের মধ্য দিয়ে নরসিংদীবাসীকে একাধিকবার দেশ-বিদেশে সম্মানিত করেছেন। এবার তিনি স্বীয় শ্রেষ্ঠত্বের অর্জন দিয়ে নরসিংদীবাসীকে আবারও সম্মানিত করেছেন।

ড.মশিউর রহমান মৃধা’র জীবন ও কর্ম বৃত্তান্ত:
সমাজে কিছু মানুষ জন্মগ্রহণ করেন মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য। নিত্যদিনের সৃষ্টির নেশায়, আত্মনিমগ্নতায় এবং সৃজনশীলতায় কেটে যায় তাদের অষ্টপ্রহর, জীবনের স্বপ্নময় দিবস রজনী। স্বার্থ ও প্রত্যাশাহীন ঐসব নির্মোহ মানুষেরা সমাজের চালিকাশক্তি ও শাশ্বত প্রাণের উদ্দীপক। বহুমাত্রিক কবি শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড.মশিউর রহমান মৃধা তাদেরই একজন। তাঁর জন্ম ০৮ মে, ১৯৬৭ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার সাহেপ্রতাপ গ্রামে। বাবা মোখলেছুর রহমান মৃধা নরসিংদী সরকারি কলেজের একজন কর্মকর্তা এবং মা জাহানারা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৯ সালে ‘সমকালীন বাংলা সাহিত্য ও একটি প্রায়োগিক বিশ্লেষণ’- অভিসন্দর্ভের উপর পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।


ড. মৃধা গদ্য-পদ্য মিলিয়ে একটি নান্দনিক জীবন তৈরি করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী, অমায়িক ও সংস্কৃতিকে লালন করেন মনে-প্রাণে। দ সংগঠক, মৌলিক গবেষক ড.মশিউর রহমান মৃধা ছাত্রজীবন থেকে সাহিত্য চর্চায় জড়িত ও নিবেদিত। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও সাহিত্য সাময়িকীতে তাঁর কবিতা ও নিবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে। প্রান্তিক মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, সূক্ষ্ম অনুভূতি, সমাজের নানা অসংগতি ও সমসাময়িক ঘটনাবলী তাঁর লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা করেন। সংগঠক হিসেবে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে। তিনি নরসিংদী জেলা স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন দীর্ঘদিন যাবত।
তাঁর প্রকাশনাসমূহ : কাব্যগ্রন্থ- বিপন্ন যৌবন, স্বপ্নের খসড়া, আনন্দনন্দিত শুভ সম্ভাষণ, হৃদয়ের চিলেকোঠায়, বেদনার সাবলীল প্রকাশ, গহীন রাতের উড়োচিঠি, মশিউর রহমান মৃধা’র নির্বাচিত কবিতা এবং আমি অন্য কেউ। এছাড়াও তাঁর প্রবন্ধের বই ‘জীবন ও স্বপ্ন সমান্তরাল’ এবং এ সময়ের জনপ্রিয় আবৃত্তিকার মাহিদুল ইসলামের কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তির অডিও সিডি ‘ফাগুনে আগুনে বাসন্তী জীবন’ ও ‘আমি যদি তুমি হতাম’ ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।


তিনি নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর শহীদ স্মৃতি কলেজের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে তাঁর সফল নেতৃত্বে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ঢাকা বোর্ডে ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে টানা তিনবার ২য় স্থান, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে সেরা ফলাফল অর্জন করে। ড.মশিউর রহমান মৃধা কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। একটি হলো শৃঙ্খলা অপরটি ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক। কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ভেঙ্গে বৈচিত্র্যময় পাঠদান-কৌশল ও পরিচালন পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন ড. মৃধা।

তিনি মনে করেন, শিক্ষক শুধুমাত্র শিক্ষকতার জন্যেই। তাঁর ধ্যান-জ্ঞান জুড়ে থাকবে শিক্ষার্থী আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একজন শিক্ষক হলো শিক্ষার্থী যিনি পড়াশুনা করে কাস নিবেন এবং জীবনমুখী শিক্ষা শিক্ষার্থীর হৃদয়ঙ্গম করাবেন। তিনি শিক্ষককে শিল্পীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, শিল্পীর মতো শিক্ষকও একজন তারকা যদি তিনি তাঁর ক্লাসটিকে মাতিয়ে তুলতে পারেন। তিনি আশাহীন স্বপ্নহীন নন, স্বপ্ন দেখেন একটি মেধাসমৃদ্ধ বাংলাদেশের।

 



এই বিভাগের আরও