কোরবানি না করে অর্থ দান করার কোন সুযোগ নেই
১৯ জুলাই ২০২০, ১০:১৮ পিএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম
জীবনযাপন ডেস্ক:
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম আ. থেকে শুরু করে সকল যুগে কোরবানি ছিলো। তবে তা আদায়ের পন্থা এক ছিলো না। শরীয়তে মুহাম্মাদীর কুরবানি মিল্লাতে ইবরাহীমীর সুন্নত। সেখান থেকেই এসেছে এই কোরবানি। এটি শাআইরে ইসলাম তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্তর্ভুক্ত। কোরবানি একটি স্বতঃসিদ্ধ ওয়াজিব আমল, যা শাআয়েরে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এর মাধ্যমে শাআইরে ইসলামের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
কোরবানি শব্দের অর্থ উৎসর্গ ও নৈকট্য অর্জন। শরিয়তের পরিভাষায় জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে জবেহ যোগ্য উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ছাগল বা ভেড়াকে মহান আল্লাহর অধিক সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে জবাই করাকে কোরবানি বলা হয়।
রসুল সা: নিজেও প্রতি বছর তা আদায় করতেন, হাদীস ও সুন্নাহে উম্মতের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের প্রতি তা আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন এবং এর নিয়মনীতি শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি রসুল সা: জীবনের সর্বশেষে বছর নিজে ১০০টি উট কোরবানি করেছিলেন।
প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে ঘনিয়ে আসছে কোরবানি। চাঁদের হিসাব অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে এ কোরবানি। এবারের কোরবানি রূপরেখা কেমন হবে? মহামারির এ সময়ে মানুষের কোরবানির ভাবনা কেমন হওয়া উচিৎ। এ নিয়ে ইতিমধ্যে চলছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। চলছে আলোচনা-টকশো। করোনায় কোরবানি করায় মানুষের করণীয় কী? কোরবানি করবে কি, করবে না ইত্যাদি।
কোরবানি না করে অর্থ দান করার প্রস্তাব: কলকাতা রাজ্য থেকে প্রকাশিত একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কোভিড অতিমারির আবহে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাচ্ছেন কলকাতা রাজ্যের মুসলিম নেতারা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইসারত আলি মোল্লা বলেন, এ বছর পশু উৎসর্গ না করে দয়া করে দুঃস্থের পাশে দাঁড়ান।
কলকাতা রাজ্যের সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী সমিতির সম্পাদক তথা শিক্ষক এস এম শামসুদ্দিন রাজ্যের মুসলিমদের কাছে আবেদন রেখেছেন, “করোনার কথা মাথায় রেখে এবার দয়া করে পশু কোরবানি দেবেন না। ওই টাকা গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দিবেন।
টালিগঞ্জের টিপু সুলতান মসজিদের কর্ণধার তথা টিপু সুলতানের প্রপৌত্র আনোয়ার আলি শাহ বলেন, “সাধারণ মুসলিমদের কাছে আমাদের আবেদন এই যে এবার পশু কোরবানি থেকে বিরত থাকুন। ওই টাকা নিজ নিজ এলাকায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দান করুন।
আমাদের বাংলাদেশে করোনা মহামারিজনিত অবস্থার প্রেক্ষিতে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, যেহেতু দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ অভাবে আছেন। এমতাবস্থায় কোরবানি না করে তার অর্থ গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া হোক এমতাবস্থায় ইসলাম কি বলে? আমাদের করণীয় কি?
ইসলাম কি বলে:
কোরবানি ও অভাবগ্রস্তদের সহায়তা- এ দুটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ, দুটি বিষয়েই মানুষের সম্পৃক্ত থাকা উচিৎ। কোরবানি ইসলামের একটি ওয়াজিব বিধান। যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব, তাকে অবশ্যই কোরবানি দিতে হবে বা এই বিধান পালন করতেই হবে। কেউ যদি মনে করেন যে, ওয়াজিব কোরবানি বাদ দিয়ে সেই টাকাটা অভাবগ্রস্ত মানুষকে বা কোনো গরিবকে দান করবেন, সেটা মোটেও সঠিক হবে না এবং এটি ইসলামি হুকুম পরিপন্থী হবে।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।(মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন فصل لربك وانحر অর্থ: অতএব আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।
যদি কারো ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে এবং তিনি সেই ওয়াজিব আদায় না করে টাকা অভাবগ্রস্তদের দান করেন বা গরিবদের দিয়ে দেন, তবে সেই দানের দ্বারা কোরবানি করার দায়িত্ব পালিত হবে না। সে ইবাদত তরককারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
এই ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলো-
১. সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্থ খরচ করে কোরবানির ওয়াজিব হুকুম আদায় করতে হবে। এর বাইরে যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অভাবগ্রস্ত বা গরিব মানুষকে সহযোগিতা করবে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- কারো অভ্যাস ছিল তিনি প্রতি বছর এক লাখ টাকা মূল্যের গরু কুরবানি করেন, তার উচৎ হবে এবার তিনি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির ওয়াজিব হুকুম আদায় করবেন এবং বাকি টাকাটা অভাবগ্রস্ত বা গরিবদের দান করে দিবেন। এই দানকে ইসলাম শুধু অনুমোদনই করেননি বরং ভালো এবং উত্তম বলেছে।
২. যিনি দুটি বা তিনটি গরু কোরবানি করতেন, তিনি এবার একটি গরু কোরবানি করবেন এবং বাকি টাকা দান করে দিবেন।
৩. কারো যদি বেশি টাকা বা বেশি পরিমাণ গরু কোরবানি করার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে তিনি নিজের ওয়াজিব কোরবানি আদায় করবেন।
৪. সামর্থ্য কম থাকা মানুষের ক্ষেত্রেও একই বিধান। মোটকথা হলো, কোরবানির ওয়াজিব বিধানটি সবাই সর্বনিম্ন যত টাকায় সম্ভব আদায় করবেন এবং বাকি টাকা অভাবগ্রস্ত মানুষকে দান করে দেবেন।
৫. আরো একটি কাজ করা যেতে পারে সেটা হলো- আমরা যারা কোরবানি দেই সবাই তো কোরবানির গোশত বা মাংস দান করি। এবার আমরা কোরবানির গরুর মাংস বা গোশত অভাবগ্রস্ত মানুষের মাঝে বেশি পরিমাণে দান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই স্বতঃসিদ্ধ ওয়াজিব ইবাদত যথাযথ মর্যাদার সাথে সময়মতো গুরুত্বের সাথে আদায় করার তাওফিক দিক। আমীন।
লেখক: মুফতী মাহমুদ হাসান, দারুল হাদীস (এম এ ইসলামিক স্টাডিজ)। দারুল ইফতা (ইসলামিক আইন ও গবেষণা বিভাগ) ঢাকা। আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ (অনার্স) ঢাকা।
বিভাগ : জীবনযাপন
- শেখেরচরে ডিস ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১
- রায়পুরায় বালু মহালের ড্রেজার থেকে ভ্রাম্যমান আদালতকে লক্ষ্য করে গুলি
- বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে নরসিংদীতে রেস্তোরা মালিক সমিতির মানববন্ধন
- নরসিংদীতে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদযাপন
- তামাকজাত পণ্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চেয়ে চিকিৎসায় ব্যয় বেশি
- অভিযান পরিচালনা করে কারেন্ট জাল সমস্যা সমাধান করা যাবে না :মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
- অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ
- নরসিংদীতে ৩ দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব শুরু
- ঢাকার বাইরে প্রথম নরসিংদীতে রয়েল এনফিল্ড শোরুম উদ্বোধন
- শিবপুরে প্রবীণ আবাসে অনুষ্ঠিত হলো আনন্দ আয়োজন
- শেখেরচরে ডিস ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১
- রায়পুরায় বালু মহালের ড্রেজার থেকে ভ্রাম্যমান আদালতকে লক্ষ্য করে গুলি
- বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে নরসিংদীতে রেস্তোরা মালিক সমিতির মানববন্ধন
- নরসিংদীতে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদযাপন
- তামাকজাত পণ্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চেয়ে চিকিৎসায় ব্যয় বেশি
- অভিযান পরিচালনা করে কারেন্ট জাল সমস্যা সমাধান করা যাবে না :মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
- অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ
- নরসিংদীতে ৩ দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব শুরু
- ঢাকার বাইরে প্রথম নরসিংদীতে রয়েল এনফিল্ড শোরুম উদ্বোধন
- শিবপুরে প্রবীণ আবাসে অনুষ্ঠিত হলো আনন্দ আয়োজন