নিজেকে করোনাক্রান্ত মনে হলে কী করবেন?
২৪ জুন ২০২০, ১২:২২ এএম | আপডেট: ২০ মে ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

জীবনযাপন ডেস্ক:
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে এখন কারো জ্বর এবং সাথে শুকনো কাশি অথবা শরীর ব্যথার মত দুয়েকটি উপসর্গ ও লক্ষণ দেখা দিলেই স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর উপচে পড়া ভিড় এবং সেবা না পাওয়া নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে অনেকেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হাসপাতালে যাবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন। কিন্তু আপনি যদি বুঝতে পারেন যে, আপনার মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের একাধিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাহলে কী করবেন?
এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাবেরা গুলনাহার, ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক কাজি সাইফুদ্দিন বেন্নুর এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শগুলো নিচে দেয়া হলো...
× শুরুতেই আলাদা হয়ে যান: করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম লক্ষণ হলো জ্বর এবং শুকনো কাশি। এছাড়া থাকতে পারে শরীরের পেশীতে ব্যথা, গলা ব্যথা, স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি না থাকা, শ্বাসকষ্ট, কখনো পেট খারাপ ও বমি বা বমি বমি ভাব। চিকিৎসকেরা মনে করেন, কেউ যদি নিজের মধ্যে এ রকম একাধিক লক্ষণ দেখতে পান, তাহলে শুরুতেই 'সেলফ-আইসোলেশনে' চলে যান, অর্থাৎ নিজেকে পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলুন। এতে পরিবার, কর্মস্থল, এবং আশপাশের মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে।
সম্ভব হলে আলাদা একটি ঘরে থাকুন, যেখানে প্রাতঃকর্ম এবং অন্যান্য কাজের জন্য বাইরে বের হতে না হয়। খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধ ঘরের দরজার বাইরে রেখে যাবেন পরিবারের সদস্যরা। এই ব্যবস্থা করা সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে অন্তত ছয়ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন এবং মাস্ক পড়ুন।
× নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে: যদিও চিকিৎসকেরা বলছেন, এখন সাধারণভাবে জ্বরের সঙ্গে আরো এক বা একাধিক উপসর্গ দেখা গেলে কোভিড-১৯ ধরে নিয়েই ব্যবস্থা নিতে হবে অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় খাতে নমুনা পরীক্ষা করানো যায়। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৬২ টি সরকারি পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার মধ্যে ৩২টি ঢাকায়। সেক্ষেত্রে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া হটলাইন নম্বরে ফোন দিয়ে, অথবা স্থানীয় সিভিল সার্জন কিংবা সিটি কর্পোরেশনে যোগাযোগ করতে হবে। সরকারি পরীক্ষাগারে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষা করানো যাবে। বেসরকারিভাবে নমুনা পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করালে ৩,৫০০ টাকা এবং বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করলে ৪,৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ বেঁধে দিয়েছে সরকার।
× গরম পানির গার্গল ও ভাপ: আপনি হয়ত নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন, কিন্তু তার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত বসে না থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু কাজ করতে হবে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে গরম পানির গার্গল করা এবং চিকিৎসকেরা বলছেন দিনে অন্তত চার থেকে ছয়বার গার্গল করুন। এছাড়া দিনে কয়েকবার গরম পানির ভাপ নিন।
× পুষ্টিকর খাবার খান: চিকিৎসকেরা মনে করেন, এ সময় ইম্যুনিটি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন খাবার খান। এজন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খান। স্যুপ খেতে পারেন। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
× চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা সামাজিক মাধ্যমে কারো শেয়ার করা প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ খেতে নিষেধ করছেন। টেলিফোনে কিংবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, নিজের উপসর্গ ও লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। তবে ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি জাতীয় ওষুধের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, তাই সেটি প্রেসক্রিপশন ছাড়াও খেতে পারেন।
× শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা খেয়াল রাখুন: এসময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার ওঠানামা খেয়াল রাখতে হবে। পালস অক্সিমিটার নামে ছোট একটি মেডিকেল যন্ত্র এক্ষেত্রে হাতের কাছে রাখতে পারেন। আঙুলের মাথায় লাগিয়ে হৃৎস্পন্দন ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যায়। সাধারণত পালস অক্সিমিটারে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ অক্সিজেন মাত্রাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম হলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, যার ফলে শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বুক-ব্যথা, কিংবা হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। তখন অক্সিজেন দিতে হবে। তখন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, অথবা বাড়িতেই অক্সিজেন দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে, শ্বাসকষ্ট না হলে হাসপাতালে যাবার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন চিকিৎসকদের অনেকেই।
× মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে: কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন বেশিরভাগ মানুষ। চিকিৎসকেরা মনে করেন, এসময় রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে, এবং তাকে সাহস দিতে হবে। ইতিবাচক চিন্তা করতে সহায়ক কাজকর্ম করা, এবং প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে।
× ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের বিশেষ সতর্কতা: কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অ্যাজমার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, কিংবা যাদের বয়স বেশি তাদের ঝুঁকি অন্য রোগীদের বেশি। সেজন্য আপনাকে বাড়তি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অন্যান্য কোভিড-১৯ রোগীর জন্য যা যা করনীয়, তাদের জন্যও সেগুলো প্রযোজ্য হবে। খেয়াল রাখতে হবে শরীর যাতে পানিশূন্য হয়ে না যায় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম করুন। সেই সঙ্গে আগে থেকে যেসব ওষুধ চলছিল সেগুলো চালিয়ে যেতে হবে। তবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। (সূত্র: বিবিসি বাংলা)
বিভাগ : জীবনযাপন
- নরসিংদীতে অস্ত্র ও গুলিসহ যুবক গ্রেপ্তার
- মনোহরদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু
- বেলাবতে ধান আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষক নিহত
- শিবপুরে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার
- সংস্কার কখনও বটগাছের মত এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকে না: রহুল কবির রিজভী
- করিডোরের নামে খাল কেটে কুমির আনা হচ্ছে: নরসিংদীতে নূরুল হক নূর
- ইউপিডিএফ সদস্যদের হাতে অপহৃত রবি'র টেকনিশিয়ান ইসমাইলকে উদ্ধারের দাবি পরিবারের
- নরসিংদীতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্রীড়া উৎসব ও পুরস্কার বিতরণ
- পলাশে সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত: ৩ ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
- নরসিংদীতে ফুটবল প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ
- নরসিংদীতে অস্ত্র ও গুলিসহ যুবক গ্রেপ্তার
- মনোহরদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু
- বেলাবতে ধান আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষক নিহত
- শিবপুরে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার
- সংস্কার কখনও বটগাছের মত এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকে না: রহুল কবির রিজভী
- করিডোরের নামে খাল কেটে কুমির আনা হচ্ছে: নরসিংদীতে নূরুল হক নূর
- ইউপিডিএফ সদস্যদের হাতে অপহৃত রবি'র টেকনিশিয়ান ইসমাইলকে উদ্ধারের দাবি পরিবারের
- নরসিংদীতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্রীড়া উৎসব ও পুরস্কার বিতরণ
- পলাশে সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত: ৩ ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
- নরসিংদীতে ফুটবল প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ