ডিজিটাল মিডিয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনার ঘোষণা ভারতের

১১ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৩৯ পিএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ০২:২৭ পিএম


ডিজিটাল মিডিয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনার ঘোষণা ভারতের
ফাইল ছবি।

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:

ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া ও কনটেন্ট প্রোভাইডারদের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এতদিন এই বিষয়টি দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে এই সিদ্ধান্ত কেবল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বদলের গল্প নয়, এর পেছনে আছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ার ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনাও।

এখন যে কেউ ইচ্ছে করলে ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল খুলে ফেলতে পারেন। শুরু করে দিতে পারেন ইউটিউব নিউজ চ্যানেল। তারপর সেখানে ইচ্ছেমতো খবর পরিবেশন করতে পারেন। এতে কোনও নজরদারি এবং দায়বদ্ধতা নেই। স্বশাসিত কোনো সংস্থাও নেই তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য।

দেশটিতে খবরের কাগজের জন্য প্রেস কাউন্সিল, টিভির জন্য সেলফ রেগুলেটরি মেকানিজম ও সিনেমার জন্য সেন্সর বোর্ড আছে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম ও ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ার জন্য খোলা পড়ে আছে পুরো ময়দান।

সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় সরকারের কাছে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি স্বশাসিত সংস্থার বিষয়ে মতামত জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতামত দেয়ার আগে ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া ও নেটফ্লিক্সের মতো কনটেন্ট প্রোভাইডারকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হলো। তারা এবার মন্ত্রণালয়ের বিধিনিষেধ মানতে বাধ্য থাকবে।

দেশটিতে ইংরেজিতে একটি পোর্টাল চালান জয়ন্ত ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমাকে পোর্টাল খোলার জন্য কোনও রেজিস্ট্রেশন কিংবা অনুমতি নেয়ার দরকার হয়নি। এখন এক বছর সাংবাদিকতা করে বা না করে যে কেউ নিউজ পোর্টাল খুলে ফেলতে পারছেন। তাতে যা খুশি লেখা হচ্ছে। ফলে একটা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকলে ভালো। সব চেয়ে ভালো কোনও স্বশাসিত সংস্থার অধীনে বিষয়টি নিয়ে আসা। সম্ভবত বিষয়টি সে দিকেই যাচ্ছে।

ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক শারদ গুপ্তার মতে, বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ভারতে সামাজিক মাধ্যমে রাজত্ব করে এসেছে এবং এখনও করছে। তিনি বলেন, বিজেপি সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রচার করেছে। এখন বিষয়টি বুমেরাং হয়েছে। তাই সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলছে তারা।

সম্প্রতি সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী মামলায় তারা সুপ্রিম কোর্টের কাছেও এই আবেদন জানিয়েছিল। দেশটির সর্বোচ্চ এই আদালত বলেছে, আগে এই মামলা নিয়ে তারা ভেবে দেখবেন, পরে অন্য বিষয় দেখবেন।

প্রশ্ন আরও অনেক আছে। টিভিতে সেলফ রেগুলেটরি মেকানিজম আছে। তা সত্ত্বেও ভারতের বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল যেভাবে খবর করছে, আলোচনা করছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, সেই মেকানিজমের কার্যকারিতা কতখানি?

সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি কতখানি হওয়া উচিত? ভারতে স্বশাসিত সংস্থার তো অভাব নেই। অভিযোগ, অনেক সংস্থাতে সরকারের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া কিছুই হয় না।তাই সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের হাতে থাকলে সেখানেও বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে।



এই বিভাগের আরও