টানা বৃষ্টি: ঈদের নাটক নিয়ে দুশ্চিন্তায় নির্মাতারা

১৩ জুলাই ২০১৯, ০২:৩৭ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম


টানা বৃষ্টি: ঈদের নাটক নিয়ে দুশ্চিন্তায় নির্মাতারা

বিনোদন ডেস্ক:

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সারাদেশে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি থমকে গেছে শোবিজ অঙ্গনও। স্থবির হয়ে পড়েছে শুটিং, ডাবিং, এডিটিং এর কাজ। বাতিল হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি গানের রেকর্ডিং এবং কনসার্ট। তবে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন ছোটপর্দার নির্মাতা ও তারকারা।

কারণ নাটকপাড়ায় এখন চলছে ঈদের ধুম। পূর্ব সিডিউল অনুযায়ী নাওয়া-খাওয়া ভুলে এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিটে দৌড়াতে হয় তারকাদের। অথচ এই সময়ে এরকম অবিরাম বৃষ্টিতে অনেক শুটিংই বাতিল হয়ে যাচ্ছে। আর এই অবস্থায় নতুন করে আবার সিডিউল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হবে তারকা ও নির্মাতাদের।

এদিকে নির্মাণাধীন এসব নাটক টেলিফিল্মের বেশির ভাগই চ্যানেল প্রচারের দিনক্ষণও চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে কঠিন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নাট্যনির্মাতারা। বিশেষ করে গত তিনদিনের বৃষ্টিপাতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে নাটকপাড়ায়। অনেকেই আউটডোরের লোকেশন পরিবর্তন করে ইনডোরে শুটিং করার চেষ্টা করছেন। তবে মনেরমতো কাজ হচ্ছে না বলে জানালেন ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন নির্মাতা। অনেকেই হাল ছেড়ে দিয়ে শুটিং বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। 

গতকাল শুক্রবার উত্তরায় ঈদের নাটকের শুটিং করছিলেন নিমার্তা সাগর জাহান। অপূর্ব ও সাবিলা নূরকে নিয়ে 'তোমার চোখে চেয়ে' নাটকের শুটিং চলছিল আপনঘর-৩তে।

সাগর জাহান বলেন, 'আমি ইনডোরে শুটিং করছি তাই আজ (গতকাল) সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যারা বাইরে শুটিং করছেন তাদের যে কি খারাপ অবস্থা যাচ্ছে তা বৃষ্টির অবস্থা দেখেই বোঝা যায়। গ্রামের প্রেক্ষাপটের নাটকের অবস্থা তো আরও খারাপ। তারাতো ক্যামেরা চালু-ই করতে পারছেন না। এবারের ঈদের জন্য আমি দুটি ৭ পর্বের নাটক, একটি টেলিছবি ও তিনটি খন্ড নাটক করছি। আজ দিয়ে সবে তিনটি খন্ড নাটকের শুটিং শেষ হবে।

তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে না এলে কীভাবে বাকি কাজগুলো করব তাই চিন্তা করছি। বৃষ্টির ফাঁকে বাইরের শুটিং ভালো হয় না। অনেক সময় বৃষ্টির কারণে বাইরের সিকু্যয়েন্স ভিতরে করতে হয়। এতে নাটকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। মনের মতো কাজ হয় না। আবার কিছু দৃশ্য আছে যা শুধু বাইরের জন্যই তা বৃষ্টির কারণে সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় থাকতে হয়। দিন পার হয়ে গেলে শিল্পীদের সিডিউল এই মুহূর্তে পাওয়া অসম্ভব। সব মিলিয়ে বৃষ্টিতে নাকাল শোবিজ অঙ্গন।

শুক্রবার (১২ জুলাই) পুরান ঢাকায় শাহনিয়াবাত শাওনের পরিচালনায় ঈদের একটি নাটকের শুটিং করছিলেন অভিনেতা শ্যামল মওলা। এ অভিনেতা বলেন, আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় নিয়ে নির্মাতারা সেভাবেই কাজ করেন। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে শুটিং করেছি। আজও ভিজেছি। বৃষ্টি হলেও নাটকের কাজ বাধ্য হয়ে করতে হয়। বাইরে সম্ভব না হলে ভিতরে শুটিং চালিয়ে নিতে হয়। আর তাও সম্ভব না হলে শুটিং বন্ধ রাখতে হয়। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় নির্মাতা ও প্রযোজকদের। শিল্পীদের ফের সিডিউল পাওয়াও কঠিন। 

নির্মাতা জুয়েল হাসান জানান এবারের ঈদে তিনি দুটি ৭ পর্বের নাটক পরিচালনা করবেন। 'আলগা পিড়িত' ও 'ইটিশ পিটিশ প্রেম' নামের নাট দুটির শুটিং শুরু হবে ২৫ জুলাই থেকে। চলমান আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত এ নির্মাতা। জুয়েল হাসান বলেন, এখন যারা কাজ করছেন তারা সত্যিই সমস্যায় আছেন। আউটডোরে নাটকের দৃশ্যায়ন থাকলে তা ইনডোরে কী করে সম্ভব। তাতে তো নাটকের গল্পের সঙ্গে মিল হবে না। নদীর ধারের দৃশ্য কী ঘরের ভিতর হয়? বৃষ্টির এই অবস্থা দেখে কয়েকজন নির্মাতার খবর নিলাম ফোনে। তারা খুব সমস্যায় পড়েছেন। শুটিং করতে পারছেন না। 

নির্মাতা ও অভিনেতা শামীম জামান বর্তমানে অবস্থান করছেন গাজীপুরের পূবাইলে। সেখানে 'চুটকি ভান্ডার-৮' এর শুটিং ছিল গতকাল শুক্রবার। পরিচালনার পাশাপাশি এ নাটকে তিনি অভিনয়ও করছেন। বৃষ্টির কারণে তিনি শুটিং করতে পারছেন না বলে জানান। তবে বৃষ্টি থামার ফাঁকে ফাঁকে শুটিং চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।


বিভাগ : বিনোদন


এই বিভাগের আরও