লাগামহীনভাবে বাড়ছে  পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম

০৯ জুলাই ২০১৯, ০১:০১ পিএম | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫২ পিএম


লাগামহীনভাবে বাড়ছে  পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঈদুল আযহার আরও এক মাসের বেশি সময় বাকী থাকলেও বাজারে লাগামহীনভাবে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেয়াজে ১৫ থেকে ২০ টাকা, আদা ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা ও রসুন ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গত ১৫ দিনের হিসেব করলে খুচরা বাজারে এ দাম বেড়েছে আরও বেশি। 

রোববার (৭ জুলাই) রাজধানীর খুচরাবাজারে প্রতি কেজি আমদানি পেঁয়াজ ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে ছিল যথাক্রমে ২৮ থেকে ৩৫ টাকা ও ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গত এক বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশের বেশি। আর সোমবার (৮ জুলাই) দেশি রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে ছিল যথাক্রমে ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। গত এক বছরের ব্যবধানে রসুনের দর বেড়েছে ২০ থেকে ৫৩ শতাংশ।

এছাড়া সোমবার খুচরাবাজারে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ২০০ টাকায়। গত গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। এক বছরে দাম বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।

সোমবার দিনাজপুরের হিলি বন্দর ও রাজধানীর কাওরান বাজারে খোঁজ নিয়ে দাম বাড়ার এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে হঠাত্ করে লাগামহীনভাবে দাম বাড়ায় ভোক্তারা শঙ্কিত। ঈদের আগে একটি অসাধু চক্র কারসাজি করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যায় পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একারণে সেখানে আগের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রত্যাহার করে নেয়ায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও কমে যাচ্ছে। এজন্য দাম বেড়েছে।

গত মাসে সচিবালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি-সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা বৈঠকে বাণিজ্যসচিব মো. মফিজুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ৮০ টাকার আদা ১৬০ টাকা হলো কেন? আগামী কোরবানির ঈদ আসতে আসতে এটা আরো বেড়ে যাবে। কিন্তু, কেন এটা হবে?

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসীর, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আড়তদার আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বাস্তবতা হলো বৈঠকের পর দাম না কমে উল্টো আরো বেড়েছে। গত ১০দিন ধরে হুহু করে দাম বেড়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের। বর্তমানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের মোকামগুলোতে মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৬ টাকা দরে। সপ্তাহখানেক আগে এই পেঁয়াজ ১৭ থেকে ২০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়।

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে দাম বাড়ার এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে বাস্তবে দাম বেড়েছে আরো বেশি।

বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার দেশে আদার উত্পাদন কম হয়েছে। আদা আমদানিকারক দেশ ভারত, চীন ও মিয়ানমারেরও একই অবস্থা। উত্পাদন কম হয়েছে। ফলে আদার দাম বেশি।

হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক মোফাজ্জল হোসেন সোমবার জানান, রোববার বন্দরে ভারতীয় পেঁয়াজ সবোচ্চ ২৮ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে। কমে বিক্রি হয়েছে ২৫-২৬ টাকায়।  সোমবার সেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে আবার ২-৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে দাম কমেছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় দাম আবার বাড়বে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় আমদানিকারকের প্রতিনিধি আইয়ুব আলী জানান, সামনে কোরবানীর ঈদ  তাই দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

 


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও